
নিজস্ব প্রতিনিধি,মেদিনীপুর:
বিপ্লবী জেলায় বিপ্লবীদের সন্ত্রাসবাদী বলে আখ্যা যা নিয়ে বিতর্ক গোটা পশ্চিম মেদিনীপুর জুড়ে।যদিও এই ঘটনায় টাইপিং মিসটেক বলেই দায়-দায়িত্ব এড়িয়েছে বিদ্যাসাগর ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষ।অন্যদিকে এই নিয়ে প্রতিবাদের ঝড় গোটা সোশ্যাল মাধ্যম জুড়ে।ডান-বাম-বিজেপি সকলেই একযোগে প্রতিবাদ করেছেন এই ঘটনা।

এও সম্ভব তাও আবার খোদ বিপ্লবী শহর মেদিনীপুরে। রাতারাতি জেলার জীবন দেওয়া বিপ্লবীরা হয়ে উঠলেন সন্ত্রাসবাদী।যা নিয়ে বিতর্ক এবং প্রতিবাদের ঝড় গোটা পশ্চিম মেদিনীপুর জুড়ে। ঘটনাক্রমে জানা যায় বুধবার ছিল বিদ্যাসাগর নামাঙ্কিত জেলা শহর এবং রাজ্যের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয় বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের ষষ্ঠ সেমিস্টার।আর সেই সেমিস্টারের পরীক্ষা নিতে গিয়েই চক্ষু ছানাবড়া পরীক্ষার্থীদের।দেখা যায় সেই ইতিহাসের প্রশ্নে লেখা রয়েছে”মেদিনীপুরের তিনজন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এর নাম করো যারা সন্ত্রাসবাদীদের দ্বারা নিহত হন?”এই প্রশ্ন ঘিরেই উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন।এই নিয়ে বিভিন্ন সংগঠন ইতিমধ্যে বিদ্যাসাগর ইউনিভার্সিটিতে এই প্রশ্ন নিয়েই এবং বিদ্যাসাগর ইউনিভার্সিটির গাফিলতি নিয়ে অভিযোগ জমা দেয়।”শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চ”অভিযোগ এই ধরনের ঘটনা লজ্জা জনক,অগ্রহণযোগ্য দূরভিসন্ধীমূলক।

কেন মেদিনীপুরের বিপ্লবীদের অসম্মান করা হলো এবং এই ধরনের সন্ত্রাসবাদি আখ্যা দেওয়া হলো তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে।যদিও এই প্রশ্ন এরপর সোশ্যাল মাধ্যম ফেসবুক,ইনস্টাগ্রামে ছড়িয়ে পড়লে প্রতিবাদের ঝড় উঠে গোটা পশ্চিম মেদিনীপুর জুড়ে।দলমত নির্বিশেষে সকলে এর প্রতিবাদ করেন। প্রতিবাদ করেন মেদিনীপুরের বিপ্লবীদের বংশধরেরা।

এই বিষয়ে বিপ্লবী বিমল দাশগুপ্তের ছেলে রনধিত দাসগুপ্ত বলেন,”এটা অত্যন্ত লজ্জাজনক ব্যাপার এবং ধিক্কার জানাই।যদিও প্রশ্নপত্রের নিয়ে তিনি এও ব্যাখ্যা দেন যেখানে কিছু না লিখেই শিক্ষকরা নিয়োগ হয়, হাইকোর্টে যাদের কেস চলে তাদের কাছ থেকে এর থেকে আর বেশি কিছু আশা করা যায় না।এর আগেও এরা ক্ষুদিরাম বসু নেতাজিকেও সন্ত্রাসবাদি হিসেবে আখ্যা দিয়েছে।এখন সব মোবাইলে ব্যস্ত।কেউ ইতিহাস পড়ে না ইতিহাস নিয়ে চর্চা করে না।তিনি আক্ষেপের সুরে এও বলেন বাবা তিন কুখ্যাত ম্যাজিস্ট্রেট মারতে গিয়ে জীবন উৎসর্গ করেছেন অথচ দুটো বছরের দুটো দিন ছাড়া আর কোনদিনই তার খেয়ে স্মরণ করা হয় না।আগামী প্রজন্ম হয়তো জানবেই না কারা কারা বিপ্লবী ছিলেন এ জেলার।

যদিও এই নিয়ে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্টার জয়ন্ত কিশোর নন্দী বলেন প্রশ্নপত্রে কোন কারণে টাইপিং মিসটেক হয়ে গিয়েছে।আমরা বিষয়টা নিয়ে খতিয়ে দেখছি।এর সঙ্গে কারা কারা জড়িত এবং কেন এই ঘটনা ঘটলো বা ভবিষ্যতে যাতে না ঘটে তার ব্যবস্থা নিচ্ছি আমরা।

অন্যদিকে এই নিয়ে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে মেদিনী পুরে।ডান-বাম-বিজেপি সকলেই একযোগে এর প্রতিবাদ করেছে।ইতিমধ্যে খোদ মুখ্যমন্ত্রীকেও মেইল করে প্রতিবাদ জানিয়েছে বিজেপি।বিজেপি জেলা সহ সভাপতি শংকর গুছাইত বলেন এই ঘটনা অত্যন্ত নিন্দা জনক এবং ধিক্কার জানাই।বাম নেতা কুন্দন গোপ বলেন,”এটা জঘন্য তম অপরাধ।তৃণমূল ও বিজেপি দুই দলই মিলে জুলে এই ধরনের কর্মকাণ্ড করে বেড়াচ্ছে।এটা নাগপুর থেকে কন্ট্রোল হয়।ধিক্কার জানানোর ভাষা নেই।অন্যদিকে তৃণমূল নেতা কাউন্সিলর সৌরভ বসুও একপ্রকার ধিক্কার জানিয়েছেন এই প্রশ্নপত্র নিয়ে।তিনি বলেন বিপ্লবীদের এভাবে অপমানের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।