নিজস্ব প্রতিনিধি,চন্দ্রকোনা:
এক সময় আট কিলোমিটার পথ হেঁটে যেতে হতো অঞ্জলি দেওয়ার জন্য,সেই সমস্যার সমাধানে উদ্যোগী হলো মহিলারা।মোট ১৩ জন মহিলাদের নিয়ে গঠিত হলো দুর্গা পূজা কমিটি।শুরু হলো স্ব-সহায়ক দলের দুর্গাপূজা।আজও রাজ্য সরকারের অনুদান মেলেনি তবে পুজো আটকে থাকেনি তাদের।তৃতীয় বর্ষের পুজো নিয়ে মেতে উঠল তারা।
কথায় আছে যে রাঁধে, সে চুলও বাঁধে!এখানেই শেষ নয়।মেয়েরা রাঁধা ও চুল বাঁধার পরেও বাড়ির কাজ সামলে এবার শুরু করলেন নিজেদের উদ্যোগে দুর্গাপুজো।পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রোকোনার পিংলাস গ্রামে হতো না দুর্গা পুজো।মূলত সমস্যাটা এখানে নয়,সমস্যাটা ছিল একসময় ৮ কিলোমিটার রাস্তা পেরিয়ে যেতে হতো অঞ্জলি দিতে।দীর্ঘ প্রায় ৬-৭ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে কোন গ্রামেই হয় না দুর্গা পুজো।কখনও আবার এতদূর যাওয়া হয়তো সবার পক্ষে সম্ভব হতো না।তাই নিজেরাই চিন্তা ভাবনা করে গ্রামে দুর্গা পুজো করার উদ্যোগ নেয়।স্ব-সহায়ক দলের মহিলারা প্রথমে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করার পর,গ্রামের মানুষদের জানায় বিষয়টি।তবে গ্রামের মানুষরা তাদের কথায় সায় দেয়নি।এই ঘটনায় পিছিয়ে পড়েন নি মেয়েরাও।তারা পুজো করবেন বলে বেঁকে বসেন।রাতারাতি তারা নিজেদের প্রচেষ্টায় ১৩ জনের একটি কমিটি করে,গ্রামে গ্রামে গিয়ে চাঁদা আদায় করে।সেই থেকে শুরু হয় দুর্গাপুজো।২০২৪ সালে তাদের এই পুজো তৃতীয় বর্ষে পদার্পণ করল।
এবারে তাদের বাজেট চার লক্ষ টাকা।লক্ষীর ভান্ডারে জমানো পুঁজি থেকেই চাঁদা দিয়ে এবং পার্শ্ববর্তী গ্রামের মানুষের সহযোগিতায় ধুমধামে পালন করছে পুজো।অন্যান্য পুজো কমিটির মতো এই মহিলা পরিচালিত পুজো,রাজ্য সরকারের দেওয়া সাহায্যও পায় না।তাই সরকারের কাছে তারা আবেদনও করেন যাতে পরবর্তীকালে এই সাহায্য পেলে আরো ভালো ভাবে পুজো করতে পারবেন।কঠিন পরিশ্রমের মধ্য দিয়েই এই স্ব-সহায়ক দলের মহিলারা গ্রামের মানুষকে আনন্দ দেওয়ার জন্যই এই পুজোর প্রচলন।
এ বিষয়ে উদ্যোক্তা সুজাতা ভদ্রা ও সোনামনি খানরা বলেন,” আমরা কারো কাছ থেকে কোন সাহায্য পাইনি। আমাদের এই পুজো অনেক দূরে ছিল। অঞ্জলি দিতে অসুবিধা হচ্ছিল গ্রামের মহিলাদের। আমরা বারবার বিভিন্ন জনকে জানিয়েছি কোন সদুত্তর পাইনি।তাই বাধ্য হয়ে নিজেদের চেষ্টায় এই পুজোর আয়োজন।তবে সরকারি সাহায্য বা অনুদান পেলে বড় করে পুজো করা যেত”।