Khargpur tuhin:হুইল চেয়ারে বসে IIT থেকে M. tech করার লক্ষ্য বিস্ময় যুবক তুহিনের!মুখ দিয়ে চালায় ল্যাপটপ

Share

নিজস্ব প্রতিনিধি,খড়গপুর:

‘হাতে-পায়ে তেমন জোর নেই! তবে, মনের জোরেই ‘বিশ্বজয়’ করার তাগিদ অনুভব করেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার খড়্গপুর শহরের মালঞ্চ এলাকার বাসিন্দা তুহিনের।হাল ছাড়েন নি মেদিনীপুরের পেশায় ব্যবসায়ী সমীরণ ও গৃহবধূ সুজাতা।তাঁদের একমাত্র ছেলে তুহিনের এই ‘অসম’ লড়াইয়ে ‘মেরুদণ্ড’ হয়ে দাঁড়ান।

এ এক বিস্ময় বালকের কাহিনী।কাহিনীটা মোটেও সোজা না। এ হলো খড়্গপুরের মালঞ্চের বাসিন্দা তুহিনের কাহিনী।জন্মের মাত্র চার দিনের মধ্যেই ধরা পড়ে বিরল মাংসপেশীর রোগ।আর তাতে দু’পায়ে উঠে দাঁড়ানোর মতো আর সামর্থ্য হারায় তুহিন।শুধু তাই নয়,হাত দিয়েও কোন কিছু করার মতো শক্তি নেই প্রায় অবশ হতে বসা শরীরের।বড় হওয়ার পর হুইল চেয়ারই হয় তুহিনের একমাত্র সম্বল।তবে মুখের থুতনি দিয়েই এখন অনায়াসে ল্যাপটপ,মোবাইল।পেন মুখে ঢুকিয়ে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলে তাঁর পড়াশোনা, লেখালেখি।ছোট থেকে নিজেকে বিশেষভাবে সক্ষম না ভেবে আর পাঁচজন সাধারণ ছেলে-মেয়েদের মতোই নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার লড়াই শুরু তার।ছোটবেলায় একাধিক জায়গায় চিকিৎসা হলেও স্বাভাবিক জীবন ফিরিয়ে দিতে পারেননি চিকিৎসকেরা।তবে নিজের শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে পিছনে ফেলেই প্রতিষ্ঠিত হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে চলেছেন তুহিন।লক্ষ্য আইআইটি থেকে এম.টেক করা।বি.টেক করার পর সম্প্রতি এম.টেকের প্রস্তুতি নিচ্ছে তুহিন।

তার আগে আইআইটি খড়্গপুর ক্যাম্পাসের কেন্দ্রীয় বিদ্যালয় থেকে 2017 সালে মাধ্যমিক পাশ।উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেছেন রাজস্থানের কোটা থেকে।তার পর শিবপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে কম্পিউটার সায়েন্সে বিটেক করেছে সে।পরীক্ষার সময় তুহিন কখনও কারও সাহায্য নেয়নি।মুখে কলম এবং পেন্সিল নিয়ে লেখালিখি করতে কোনও সমস্যা হয় না তাঁর।

বছর 25 র তুহিনের কথায়,‘আমি মুখে পেন বা পেনসিল নিয়ে লিখতে পারি। কোনও সমস্যা হয় না। আর পরীক্ষার সময় অতিরিক্ত সময়ও নিই না। তবে পরীক্ষার সময় কাগজ নেমে গেলে বা পাতা ওল্টানোর সময় শিক্ষকেরা সাহায্য করেছেন। ছবি আঁকা হোক বা কম্পিউটার চালানো,কোনও কিছুতেই অসুবিধা হয় না।’

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য,গত 3 রা ডিসেম্বর ‘বিশ্ব প্রতিবন্ধী দিবস’ উপলক্ষে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনের তরফে তুহিনকে ‘অ্যাকাডেমিক এক্সেলেন্সি অ্যান্ড ক্রিয়েটিভ ওয়ার্কস’ সম্মানে ভূষিত করা হয়।2011 সালে বেস্ট ক্রিয়েটিভিটির জন্য রাজ্য স্তরে সম্মান।2012-13 সালে রাষ্ট্রপতির হাত থেকে সম্মাননা।2019 এ রাজস্থানের কোটা থেকে বিশেষ পুরস্কারেও সম্মানিত হয়েছেন ‘মেদিনীপুরের গর্ব’ তুহিন দে।সম্প্রতি, একটি বেসরকারি সংস্থা থেকে তুহিনের কাছে এসেছিল 50 লক্ষ টাকার চাকরির প্রস্তাব।তবে তুহিন সেই প্রস্তাবে সাড়া দেয় নি। তাঁর লক্ষ্য আইআইটি খড়্গপুর থেকে এম.টেক এবং পিএইচডি করা। শুধুমাত্র ‘মনের জোরে’ যে তুহিন এতদূর এগিয়েছেন, আগামীদিনে তাঁর বাকি স্বপ্নও পূরণ হবে বলে আশাবাদী আপামর মেদিনীপুরবাসী।


Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

dnews.in