Dewali Putul:নতুন প্রজন্ম মুখ ঘুরিয়েছে পুতুল তৈরিতে!পুতুলের ভবিষ্যৎ নিয়ে আশঙ্কা কুমোর পাড়ার শিল্পীদের

Share

নিজস্ব প্রতিনিধি,মেদিনীপুর:

প্রতিবছর কালীপূজা এবং দেওয়ালী এলে দেখা যায় রংবেরঙের দেওয়ালে পুতুলের ভিড়।একহাতা দুহাতা থেকে শুরু করে এক প্রদীপ,দুপ্রদীপ এবং 25 প্রদীপেরও দেওয়ালি পুতুল থাকে।এবারও তার ব্যতিক্রম নয়।তবে নতুন প্রজন্ম আর দেওয়ালি পুতুলের মজছে না।তারা মুখ ফিরিয়েছে এই ব্যবসা থেকে।যার জন্য ভবিষ্যতে দেওয়ালি পুতুল নিয়ে আর শঙ্কায় মেদিনীপুরের কুমোরপাড়ার শিল্পীরা।

তৈরী হচ্ছে রংবেরঙের পুতুল

একদা কিছুটা জঙ্গলমহল অধ্যুষিত পশ্চিম মেদিনী পুরের নস্টালজিয়ার পুতুল হল দেওয়ালী পুতুল।আর সেই পুতুল রীতিমতো ট্রাডিশন বজায় রেখেই এখনো করে যাচ্ছেন এই কুমোর পাড়ার কুমোররা।প্রসঙ্গত দক্ষিণ বঙ্গের যে কটি জেলা রয়েছে সেই জেলাগুলিতে মাটির তৈরির দেওয়ালী পুতুলের এক নস্টালজিয়া চাহিদা রয়েছে।একসময় সেই পুরানো যুগ থেকেই এই মাটির তৈরি দেওয়ালি পুতুল সেই সঙ্গে মাটির দেওয়ালি ঘর করে নজর কাড়তো জঙ্গলমহল।কালী পুজো উপলক্ষে এই দেওয়ালি ঘর এবং দেওয়ালি পুতুলের প্রচলন ছিল।এই দেওয়ালি পুতুল আবার এক প্রদীপ দু প্রদীপ নয় সেই সঙ্গে 25 প্রদীপ 30 প্রদীপ পর্যন্ত তৈরি করা হতো এবং দেওয়ালি পুতুল এক হাতা দুই হাতার পাশাপাশি 10 হাতা এবং পঁচিশ হাতা ছিল এই পুতুলের।রীতিমতো এই মাটির তৈরি পুতুল করে তা পুড়িয়ে রোদে শুকনো করে রং করে এবং তাতে এই প্রদীপে তেল সলতে দিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়ালি ভরে বসিয়ে দিত মানুষজন।আবার হাতার পুতুল গুলোতে কেরোসিন দিয়ে ডিবরি দিয়ে জ্বালিয়ে দিত সন্ধ্যেবেলায় এর সঙ্গে মুড়ি,মুড়কি,খেলনা দিয়ে বিশেষ ভোগ নিবেদন করা হতো।

এরকমই ট্রাডিশন বজায় ছিল জঙ্গলমহলে। যদিও বর্তমানে সেই ট্রাডিশনেই বজায় রয়েছে।রীতিমতো দেওয়ালী উৎসব উপলক্ষে দেওয়ালে পুতুল তৈরিতে ব্যস্ত কুমোরপাড়া শিল্পীরা।বাড়ির ছোট বড় বউ বাচ্চা সবাই মিলে দেওয়ালি পুতুল তৈরি এবং তার রং করতে তারা হাত লাগিয়েছে।এই মেদিনীপুর শহরের কুমোর পাড়ার যে কজন শিল্পী রয়েছে তাদের এখন খাওয়া-দাওয়া ভুলে দেওয়ালি পুতুল তৈরি করছে।তবে এই শিল্পীদের আক্ষেপ পুরানো যুগে এক সময় কেটেছে বাপ ঠাকুরদার হাত ধরে দেওয়াল পুতুল তৈরিতে,তখন এটা ভবিষ্যৎও ছিল। কিন্তু বর্তমান প্রজন্ম আর এত খাটতে চাই না।তারা এই দেওয়ালে পুতুল তৈরীর আকর্ষণ থেকে হারিয়েছে।ফলে দেওয়ালির ভবিষ্যৎ নিয়ে আর আশঙ্কায় তারা।

এ বিষয়ে শিল্পী গৌতম দাস বলেন,”আমরা আমাদের বাপ ঠাকুরদার জন্ম থেকেই এ কাজ করে আসছি।এই দেওয়ালির সময় আমাদের বাজার খুলে।তবে এখন আগের মতন চাহিদা থাকলেও তৈরি করার শিল্পী নেই।বর্তমান প্রজন্ম আর এত খাটতে চাইছে না।তারা এই প্রফেশন ছেড়ে অন্য প্রফেশনে চলে যেতে চাইছে।তাই আমরা আশঙ্কা করছি আগামী দিনেই দেওয়ালি পুতুল ভবিষ্যৎ নিয়ে।কারণ পশ্চিম মেদিনীপুরের এই নস্টালজিয়া দেওয়ালি পুতুল একমাত্র এখানেই হয়।যদিও এখন মানুষ আর একটা দুটো নয় বরং পাইকারি করে কিনতে বেশি পছন্দ করে।এরই পাশাপাশি তার বক্তব্য এখন হাতা পুতুলের সংখ্যা কমেছে কারণ কেরোসিন নেই বাজারে।


Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

dnews.in