
নিজস্ব প্রতিনিধি,মেদিনীপুর :
বছর ঘুরলেও বাড়ি তৈরি হয় নি।প্রাপকরা বাড়ি না পেয়ে সরকারি স্কুলে বসবাস দুই বাড়ি প্রাপকদের,মেদিনীপুরেও বেহাল চিত্র।ঘটনা ক্রমে জানা যায় মেদিনীপুর শহরের ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের দুই বাড়ি প্রাপক বাড়ি না হওয়ায় ঠাই নিয়েছে সরকারি স্কুলে।আর যা ঘিরে প্রশ্ন শহর জুড়ে।
মেদিনীপুর শহরের ১৯ নম্বর ওয়ার্ড বক্সিবাজার মুকুন্দ সাগর পাড় এলাকায় রয়েছে সরকারি প্রাইমারি স্কুল কুন্দরানি প্রাইমারি স্কুল।যেই স্কুলে বর্তমানে ঠাঁই নিয়েছে দুই বাড়ি প্রাপক পরিবার।মূলত সরকারি নির্দেশ অনুসারে পৌরসভা ২৫ হাজার টাকা জমা দিয়ে তারা ৩ লাখ ৬০ হাজারের বাংলা আবাস যোজনার বাড়ি পেয়েছিলেন।সেই মতো তারা পুরনো বাড়ি ভেঙেও ফেলেছেন এবং বাড়ি করা শুরু করেছে কন্ট্রাক্টর।কিন্তু বাড়ি হতে হতে থমকে গেছে লিংটন অব্দি।ছাদ ঢালায় আর হয়নি।আর সেই তখন থেকেই প্রায় বছরখানেক ধরে স্কুলে ঠাই নিয়েছে দুই পরিবার কাউন্সিলরের নির্দেশে।এখন এই কুন্দরানী প্রাইমারি স্কুলে এই দুই পরিবারের রাঁধা,খাওয়া দাওয়া,ঘুমানো সবই চলছে একপ্রকার।স্কুলের ব্ল্যাকবোর্ড চক ডাস্টার সব সরিয়ে দিয়ে এখন ঠাঁই নিয়েছে বালিশ,কাঁথা,বিছানা এবং টেবিল আসবাবপত্র।আর এই ঘটনায় প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।কেন তাদের সরকারি স্কুলের ঠাঁই দিয়েছে কাউন্সিলার তাও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে।যদিও এ বিষয়ে পৌরসভা দোষ দিয়েছেন কেন্দ্র সরকারকে।এরই সঙ্গে তারা অভিযোগ করেছেন কেন্দ্র বাংলার প্রাপ্য টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার।

বাড়ি প্রাপক মমতা সরকার বলেন সরকারের কাছে একান্তে আবেদন আমাদের বাড়ি তৈরি করে দেওয়া হোক যত দ্রুত করা যায়।কারণ এই স্কুলে ছাত্র-ছাত্রীরা পড়তে না এলেও ভোট এলেই আতঙ্ক। কারণ আমাদেরকে জায়গা খালি করে দিতে হয়।সামনেই লোকসভা ভোট তাই আতঙ্কে রয়েছে এবং কাউন্সিলার,পৌরসভার সঙ্গে কন্ট্রাক্টরকে জানাচ্ছি তারা যেন দ্রুত আমাদের বাড়ি তৈরি করে দেয়।
এই বিষয়ে এই বাড়ি প্রাপক প্রভাত সরকার ও তার স্ত্রী পূর্ণিমা সরকার বলেন গত বছর খানেক ধরেই এই স্কুলের ঠাঁই নিয়েছি।যখন পৌরসভার কাউন্সিলর থেকে বলেছিল বাড়ি ভেঙে দিতে।কাউন্সিলররা বলেছিল তিন মাসের মধ্যে বাড়ি করে দেবেন কিন্তু তাও করা হয়ে ওঠেনি।ফলে এই স্কুলের ঠাঁই নিয়েছি আমরা।যদিও কাউন্সিলার ই বলেছে আমাদের এই স্কুলে বসবাস করতে।এখন আমরা একটাই দাবি আমাদের বাড়ি অবিলম্বে তৈরি করে দেওয়া হোক।

এ বিষয়ে ১৯ নাম্বার ওয়ার্ড কাউন্সিলর বিশ্বনাথ পাণ্ডব বলেন স্কুল অনেক দিন আগে উঠে গেছে।ছাত্ররা অন্য জায়গায় চলে গেছে।তাই এই গরীব মানুষদের আশ্রয় দেয়া হয়েছে ওখানে।ওইখানের ইলেকট্রিক বিল ওরাই মেটায়।এটা অন্যায়ের কিছুই নেই।

যদিও এই স্কুলে বাড়ি প্রাপকরা থাকার ঘটনায় উল্টো সুর পৌরসভার।এদিন মেদিনীপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান এবং ওয়ার্ড কাউন্সিল না থাকায় মেদিনীপুরের দায়িত্বপ্রাপ্ত পৌরসভার পূর্ত দপ্তরের পুর পারিষদ(CIS)সৌরভ বসুকে এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন এর পুরোটাই দোষ কেন্দ্র সরকারের। শুধু কোন একটা নির্দিষ্ট ওয়ার্ড না,গোটা রাজ্যজুড়েই এই দুর্বিষহ অবস্থা রয়েছে রাজ্যের মানুষের।কেন্দ্র বাংলার প্রাপ্য টাকা দিচ্ছে না।যার জন্য অর্ধেক বাড়ি হয়ে পড়ে রয়েছে।এই নিয়ে আমাদের নেতা-মন্ত্রীরা ধর্না অবস্থান বসেছে। আমরা চাই কেন্দ্র সরকার অবিলম্বে বিষয় নজর দিক।কারণ তারা এখন ধর্ম এবং মন্দির মসজিদ নিয়ে কোটি কোটি টাকা খরচা করছে।