নিজস্ব প্রতিনিধি,মেদিনীপুর :
প্রায় 400 বছর ধরে কাঁথকালি পুজো করে আসছে মেদিনীপুরের মানুষ!বৃহৎ গাছ আকঁড়ে থাকা দেওয়ালে কালির পুজোর কয়েক লক্ষ টাকা খরচ করে।ফল-মূল নৈবিদ্যের সঙ্গে ছাগ বলির আয়োজন হয় মায়ের পুজোয়।বিভিন্ন মনস্কামনা নিয়েদূর দূরান্তের মানুষ ছুটে আসে এই কালী মায়ের কাছে এবং সফল হয়ে ফিরে যায় তারা এই মন্দির থেকে।
বিপ্লবী আর ঐতিহ্যশালী মেদিনীপুরের অন্যতম কালীপুজো হলো মেদিনীপুর শহরের কাঁথকালীর কালী পুজো।এই পুজো প্রায় ৪০০ বছরের পুরনো।মূলত অন্যান্য জায়গার কালী প্রতিমা যেমন মন্ডপে মধ্যে প্রবেশ করে এবং কাঠামোর মধ্যে দিয়ে তৈরি হয় আবার কোথাও কোথাও সিমেন্টের তৈরি করা থাকে কিন্তু এই কালি একটু আলাদা।মায়ের মূর্তি দেওয়ালে অর্থাৎ কাঁথের মধ্যেই ৪০০ বছর ধরে অবস্থান করছে,তাই তার নাম দেওয়া হয়েছে কাঁথকালি।কথিত আছে কোন এক সময় এই মাটির দেওয়ালেই কোন এক সাধু এই কাঁথকালী পুজো শুরু করেন।একটি বৃহৎ গাছের আকঁড়ে থাকা দেওয়ালে এই কালীপুজোর সূচনা তার হাত ধরেই চলছিল।
পরবর্তীকালে হাত পরিবর্তন হতে হতে এই কালিপুজো এখন পরিচালনা করেন এলাকার মানুষ কমিটির মাধ্যমে।নির্দিষ্ট কমিটির মাধ্যমে ধুমধাম করেই চলে এই কালীপুজো।এই কালির গড়নও হয় না বিসর্জন হয় না।তবে কালি পুজোর আগে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়ে গোটা শহর পরিক্রমা করে।ঢাক ঢোল বাদ্যিসহকারে সেই পরিক্রমায় অংশগ্রহণ করেন শহরের মানুষ।আর তা দেখতে ভিড় জমান রাস্তার দু’ধারে অসংখ্য মানুষজন।কাঁথকালীর নাম অনুসারে এই জায়গার নাম হয়েছে কাঁথকালী লেন।যেই লেনে বসবাস করেন কয়েক হাজার মানুষজন।মূলত তান্ত্রিক মতে পুজো হন মা নিজেই। কালী পুজোর দিন নির্দিষ্ট ফলমূল নৈবেদ্যসহকারে ছাগ বলি হয়।বলি পরম্পরা মেনে আজও চলে আসছে এই কাঁথকালিতে।প্রায় ২ কুইন্টালের উপর মায়ের ভোগ হয়।যে ভোগ খেতে ভিড় জমান আশেপাশে কয়েক হাজার মানুষজন।তার জন্য গড়ে তোলা হয়েছে ভোগ গৃহ।কথিত আছে নিজেদের মনস্কামনা নিয়ে কেউ এই মন্দিরে এলে তার মনস্কামনা বিফলে যায় না।তাই সারা বছরের পাশাপাশি এই স্পেশাল পুজোর দিনে ভিড় জমান বহু মানুষ নিজেদের মনস্কামনা নিয়ে।
এই নিয়ে বর্তমানে কোষাধ্যক্ষ সুমঞ্জিৎ দে বলেন পুরানো সেই কথা অনুযায়ী আমরা এই পুজো করে আসছি এবং এই কালী পূজা আমাদের তান্ত্রিক মতে হয়। মূলত আমাদের কালিমা কাঁথ বা দেওয়ালে অবস্থান করে বলেই এর নাম কাঁথকালী।তবে সেই পুরনো পরম্পরা মেনে আজও আমরা বলির ব্যবস্থা করে থাকি এবং সেই বলি দেখতে হাজির হয়অসংখ্য মানুষ সঙ্গে চলে মায়ের ফলমূল সহকারে ভোগ নিবেদন।গভীর রাত অবধি পূজা হয় এবং পরের দিন সেই ভোগ খেতে হাজির হন কয়েক হাজার মানুষজন।এখন অপেক্ষা সেই কালীপুজোর।