নিজস্ব প্রতিনিধি,মেদিনীপুর:
মেদিনীপুর জুড়ে ডাক্তারদের ফি র রমরমাতে নাজেহাল শহরের সহ গ্রামের মানুষজন। ২০০- ৩০০ থেকে শুরু করে কারো কারো আবার হাজার বারোশো টাকা ভিজিট।প্রতিবার দেখানোতে প্রতিবারই সমান পরিমাণ ভিজিটে অতিষ্ঠ মানুষজন।সবাই চাইছেন সরকার দ্বারা নির্ধারিত হোক ডাক্তার দেখানোর ফি।
বাঁকুড়া পুরুলিয়া ঝাড়গ্রামের সঙ্গে অধ্যুষিত রয়েছে জঙ্গলমহল মেদিনীপুর।আর এই মেদিনীপুরের বহু গ্রাম বাংলার মানুষ প্রতিদিনই হাসপাতালের পাশাপাশি ভিড় জমান প্রাইভেটের ডাক্তারদের দেখানোর জন্য। একদিকে যেমন অর্থোপেডিক,নিউরোসার্জন,বাচ্চাদের ডাক্তার রয়েছে অপরদিকে হার্ট,কিডনি,লিভার এবং চামড়ার ডাক্তারের জন্য ফি দিয়ে দেখান এই গ্রাম বাংলার মানুষ জন।তবে দিন দিন বেড়ে চলা ডাক্তার পাড়ার ফি বৃদ্ধিতে আতঙ্ক ছড়িয়েছে জঙ্গলমহল পশ্চিম মেদিনীপুর।কারণ মেদিনীপুরে যেমন একদিকে রয়েছে চোখের ডাক্তার সহ বেশ কিছু ডাক্তারের ফি ১০০-৩০০ টাকা,তেমনি আবার হার্ট,নিউরো,কিডনি অর্থোপেডিক সহ বিভিন্ন ডাক্তারের ফি র পরিমাণ ৫০০-৭০০ এমন কি হাজার বারোশো টাকা পর্যন্ত।কারো কারো আবার ফি পরিমাণ 1800 টাকা তাও আবার কলকাতা গিয়ে দেখিয়ে আসতে হয়।এর সঙ্গে রয়েছে ডাক্তারদের নির্দেশনামা দেওয়া বিভিন্ন প্যাথলজি সেন্টারের ডায়াগনস্টিক পরীক্ষা নিরীক্ষা।ফলে একটা হার্টের ডাক্তারের কাছে ফি ডায়গনস্টিক এবং ওষুধ নিয়ে একটা মানুষের খরচা দাঁড়াচ্ছে চার থেকে পাঁচ হাজার টাকা।
এছাড়াও একবার শুধু না,যতবার ডাক্তারের কাছে ভিজিট করা যায় ততবারই সম পরিমাণ ফি নেন ডাক্তার বাবুরা।ডাক্তারবাবুরা কোথাও নিজের হাতে কোথাও বা তার ফি নেওয়ার জন্য অ্যাটেন্ডেন্স রাখা হয়।কোন কোন ডাক্তারবাবুর নাম আবার পনেরো দিন এক মাসেও নাম লেখাতে পারা যায় না।তার জন্য দিতে হয় এক্সট্রা টাকা।এছাড়াও আগে পরে বা লাইনের মধ্যিখানে জরুরী ক্ষেত্রে ডাক্তারবাবুকে পাওয়ার জন্যও দিতে হয় অ্যাটেনডেন্স কে মোটা অংকের টাকা।ফলে জঙ্গলমহল অধ্যুষিত এই গ্রামগঞ্জ থেকে উঠে আসা চাষীবাসি মানুষজন সঙ্গে বিভিন্ন অনগ্রসর মানুষজনেরা পড়েছেন সমস্যায়।কারণ ডাক্তার পাড়া হিসেবে পরিচিত এই রবীন্দ্রনগর এলাকা।যেখানের ডাক্তারদের রমরমা ও তাদের ফি র আতঙ্কে জঙ্গল মহলবাসী।অন্যদিকে কোভিডের পর ফি র পরিমাণ বাড়িয়েছে ডাক্তার বাবুরা বিভিন্ন জিনিসের দামপত্র বৃদ্ধির ওপর।ফলে নাজেহাল হচ্ছে জেলার মানুষজন।তারা চাইছেন সরকারি নির্দেশিকা।সরকারি নির্দেশিকার মধ্যে বাধা হোক ডাক্তারদের ফি র পরিমাণ।যদিও এ বিষয়ে সাধারণের মানুষের পাশাপাশি ফি কমানোর আবেদন করেছেন রাজনৈতিক দলের নেতা-নেত্রীরাও। তারাও চাইছেন একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ ফি বেঁধে দেওয়া হোক এই ডাক্তার পাড়ার ডাক্তারবাবুদের জন্য।
এ বিষয়ে সুমন মুখার্জি,জয়দেব চক্রবর্তীদের বক্তব্য সরকারি হাসপাতালে ডাক্তারদের বড্ড লাইন।তাছাড়া সেখানে সিনিয়র ডাক্তারদের পাওয়া যায় না।তাই জরুরী পরিষেবায় দৌড়ে যেতে হয় ডাক্তারদের প্রাইভেট চেম্বারে। কিন্তু দিন দিন যেভাবে ফি এর পরিমাণ বাড়ছে তাতে আমরা ক্লান্ত হয়ে পড়েছি।একদিকে কাজের বাজার নেই। কোভিডের পরবর্তী পর্যায়ে কাজের সমস্যা অপরদিকে এই ডাক্তারদের ফি দিতে দিতে আমরা আতঙ্কে আছি।যে আগামী দিনে বড় কিছু হলে দেখাবো কিভাবে।আমরা চাইছি এ বিষয়ে নজর দিক সরকার প্রশাসন এবং প্রশাসনের আধিকারিক বৃন্দ।
যদিও এ বিষয়ে রাজনৈতিক দল বিজেপি,সিপিআইএম এর ব্যাখ্যা অবিলম্বে ডাক্তারদের ফি বাঁধার দরকার আছে সরকারের।এর সঙ্গে সরকারি হাসপাতাল গুলোতে যাতে ডাক্তার বাবুরা নির্দিষ্ট টাইম করে দেখেন সেটাও অবিলম্বে করতে হবে। কারণ জঙ্গলমহলে খেটে খাওয়া গরীব মানুষেরা না হলে না ট্রিটমেন্ট করতে পেরে বিনা চিকিৎসায় মারা যাবে।
যদিও বিরোধীদের সঙ্গে সহমত ব্যাখ্যা করেননি শাসক দল।তৃণমূল জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা বলেন ডাক্তারদের একদিকে যেমন ৭০০-৮০০ টাকা ফি রয়েছে তেমনি কোথাও ৫০-১০০ টাকাও রয়েছে।তবে সরকারি যেহেতু কোন নির্দেশিকা নেই এবং ডাক্তারদেরকে কোন নির্দেশিকার দ্বারা বাঁধা যাবে না।তাই এ বিষয়ে আমাদের কোন বলার অধিকার নেই।তবে সাধারণ মানুষ যদি আমাদেরকে আবেদন করেন আমরা বিষয়টি নিয়ে অবশ্যই জানাবো।