
নিজস্ব প্রতিনিধি,মেদিনীপুর:
অবশেষে হালিমার স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে। বাবা মা অভিভাবকহীন হালিমা, ডাক্তার দম্পতির হাত ধরে পাড়ি দিচ্ছে ইতালি। এইদিন সরকারিভাবে হালিমাকে তুলে দেওয়া হলো ইতালি দম্পতির হাতে।এই নিয়ে জেলায় দত্তক শিশু সংখ্যা দাঁড়ালো ৬২ টি।

ফের মেদিনীপুরের হোম থেকে ইতালি পাড়ি দিচ্ছে হোমের শিশু। যা নিয়ে উৎসাহ জেলা কালেকটরেটে। মূলত বছর কয়েক আগে রেলস্টেশন থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল এই ছোট্ট হালিমা খাতুন(১২) কে। এরপর তাকে হোমে রেখে দীর্ঘ সরকারি আধিকারিকারা খোঁজাখুঁজি করা হয় তার বাবা-মা এবং অভিভাবকের। বহু জায়গায় ছবি দিয়ে আবেদন জানানো হয়। সেটাও কেটেছে তিন বছর। অভিভাবকহীন হালিমা ছিল হোমে।কিন্তু এবার ইতালি দম্পতির হাত ধরে হালিমা পাড়ি দিল ইতালিতে। কারণ ইতালির রেজিও এমিলিয়া(Reggio Emilia) তে বসবাস করেন এই ডাক্তার দম্পতি।একজন অর্থোপেডিক সার্জারি স্পেশালিস্ট ফ্লিপো মরিসিনি (Filippo morsiani) আরেকজন cardio surgery এলিনা রিগি (Elena righi)।

এই দম্পতি দীর্ঘদিনের কোন বাচ্চা হয়নি। ফলে নিঃসন্তান দম্পতি একটি বাচ্চার জন্য অনলাইন পোর্টালে আবেদন করেন।আর সেই আবেদনের ভিত্তিতে এবার পশ্চিম মেদিনীপুরের হোম থেকেই হালিমা চলল ইতালিতে।একদিকে নিঃসন্তান দম্পতি যেমন সন্তান পেল অন্যদিকে বাবা মা হীন হালিমা পেতে চলল তার নতুন অভিভাবক। হালিমা ভবিষ্যতে যদি ডাক্তার হতে চাই তাকে ডাক্তার বানানোর অঙ্গীকার ইতালি দম্পতির। এই দিন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার জেলা কালেক্টরেটে অতিরিক্ত জেলাশাসক কেম্পাহোন্নাইয়ার হাত ধরে ইতালি দম্পতির হাতে তুলে দেওয়া হয় হালিমা কে।এই অনুষ্ঠানে অতিরিক্ত জেলাশাসক ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন জিলা শিশু সুরক্ষা আধিকারিক সন্দীপ কুমার দাস,জিলা সমাজ কল্যাণ আধিকারিক.সৌরজতি ঘোষ প্রমুখ।ছিলেন পীযূষ রথ, জয়ন্ত রথ সহ অন্যান্য আধিকারিকেরা।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য,পশ্চিম মেদিনীপুর এই হোম থেকে এই পর্যন্ত ৬২ টা শিশু দত্তক নেওয়া হল যার মধ্যে নটি শিশু বিদেশে পাড়ি দিয়েছে। এর মধ্যে নটি শিশুর দায়িত্ব তার রিলেটিভরা দায়িত্ব নিয়েছে।যদিও এখনো পর্যন্ত ছটি শিশু হোমে রয়েছে।উল্লেখ্য এর আগেও ইতালিতে শিশু গিয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে।

এ বিষয়ে জেলার অতিরিক্ত জেলাশাসক কেম্পা হোন্নাইয়া বলেন,”আমাদের জেলা থেকে উৎসবের আকারে শিশু যাচ্ছে বেশ-বিদেশে।বিদেশে ও শিশুর সংখ্যা প্রায় ৯ টি গিয়েছে। হালিমাকে আমরা খড়গপুর রেল স্টেশন থেকে পেয়েছিলাম। আমরা এই বিদেশী দম্পত্তির যাবতীয় তথ্য খুঁজে দেখে তবেই শিশুকে তুলে দিলাম।

যদিও এ বিষয়ে ইতালি দম্পত্তি বলেন আমরা দুজনেই ডাক্তার আমরা ছিলাম নিঃসন্তান দম্পতি।বহুদিন ধরে ইচ্ছে ছিল একটু শিশুকে দত্তক নেওয়ার।সেই মোতাবেক আমরা এই ভারতে আবেদন করেছিলাম অনলাইনের মাধ্যমে।আজকে আমাদের স্বপ্ন পূরণ হলো। পাশাপাশি তারা এও বলেন ইন্ডিয়া ইজ গ্রেট এন্ড বিউটিফুল।