
চন্দ্রকোনা 6 ই সেপ্টেম্বর:
স্কুল সার্ভিস কমিশনের SLST পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ও উত্তর পরীক্ষার দুদিন আগে পাইয়ে দেওয়ার নাম করে সামাজিক মাধ্যম facebook পোস্ট করে ভুয়ো খবর ছড়ানোর অভিযোগে চন্দ্রকোনা থেকে গ্রেফতার এক যুবক।যদিও এই ব্যক্তি কে বিজেপি বলে কটাক্ষ তৃণমূলের অন্যদিকে অভিযোগ অস্বীকার বিজেপির।

জেলা পুলিশ সূত্রে জানা যায়,জেলা পুলিশের নজরদারিতে একটি ফেসবুক পোস্ট নজরে আসে।সেই পোস্টে যেখানে Arindam Pal নামের এক ব্যক্তি স্কুল সার্ভিস কমিশনের আসন্ন SLST পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ও তার উত্তর পরীক্ষার দুদিন আগে পাইয়ে দেওয়ার কথা বলেছে।এই পোস্টটিতে ওই ব্যক্তি নিজেকে মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা বলে দাবি করেন।এই বিষয়টি নজরে আসার সাথে সাথে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পুলিশ তদন্ত শুরু করে।এই তদন্তে উঠে আসে ওই ব্যক্তির আসল ঠিকানা পরিচয়।সেই সূত্রে জানা যায় ওই যুবকের বাড়ি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনা থানার অন্তর্গত মাংরুল গ্রাম পঞ্চায়েতে লোড়পুর গ্রামে।পুলিশের দাবি,ওই ব্যক্তিটি একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত।মূলত আগামী ৭ই ও ১৪ই সেপ্টেম্বর তারিখে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে স্কুল সার্ভিস কমিশনের SLST পরীক্ষা।

সেই পরীক্ষাকে সন্ধিহানও কলুষিত করতে এবং সাধারণ মানুষ ও পরীক্ষার্থীদের মধ্যে প্রশাসন ও সরকারি পরীক্ষা ব্যবস্থাকে সন্দেহজনক করে তোলার অপচেষ্টার অভিযোগে ওই ব্যক্তিকে সনাক্ত করে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।ওই ব্যক্তি তার ফেইসবুক পেজে লিখেছেন,”‘আমার বাড়ি মুর্শিদাবাদে। গত দু’দিন আগে আমার ফোন নম্বরে একটি ফোন আসে। জিজ্ঞেস করা হয়, এসএলএসটি পরীক্ষায় পাশ করে চাকরি করতে চাও? মোট ১৪ লাখ টাকা লাগবে। প্রশ্নপত্র দু’দিন আগে পেয়ে যাবে।’’ তিনি আরও লেখেন, ‘‘মুর্শিদাবাদ থেকে পরীক্ষার দু’দিন আগে বর্ধমান প্রশ্নপত্র এবং উত্তরপত্র দিয়ে যাবে। সেগুলো মুখস্থ করতে হবে। পরীক্ষার দিন পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছেও দেবে। তার পর দিন ৫০ হাজার দিতে হবে। ইন্টারভিউয়ের সময় ৪ লক্ষ টাকা লাগবে। আর বাকি টাকা চাকরি পাওয়ার পরে।’’

এর পর ওই যুবকের প্রশ্ন, ‘‘তা হলে কি এ বার এই ভাবে প্রতারণা হবে? প্রশ্নপত্র ‘লিক’ (ফাঁস) হয়ে যাবে?’’ পুলিশের দাবি প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে এই যুবকের বিরুদ্ধে।যদিও এই ঘটনা নিয়ে ইতিমধ্যে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পুলিশের ফেসবুক পেজে একটি সতর্কতামুলক পোস্ট করে সাধারণ মানুষকে এইরকম মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর পোস্ট সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট না করা ও মিথ্যা তথ্য প্রচার থেকে বিরত থাকার আবেদনও করা হয়েছে।যদিও কি কারনে ফেসবুকে যুবক এই ধরনের পোস্ট করেছে তা খতিয়ে দেখছে জেলা পুলিশের আধিকারিকেরা।পরীক্ষার দুদিন আগে এই ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে জেলা জুড়ে।

এই ঘটনায় জেলার পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার সাংবাদিকদের জানান,”আগামী ৭ এবং ১৪ স্কুল সার্ভিস কমিশনের এসএলএসটি পরীক্ষা রয়েছে। সেই পরীক্ষায় পরীক্ষার্থীদের বিভ্রান্ত করতে,পরীক্ষার্থীদের মধ্যে প্রশাসন এবং সরকারি পরীক্ষা ব্যবস্থাকে সন্দেহজনক করে তোলার অপচেষ্টা হয়েছে।যে ব্যক্তি এই কাজ করেছেন,তাঁকে শনাক্ত করে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।’’ পাশাপাশি তিনি এও বলেন ‘‘সকলের কাছে আবেদন করা হচ্ছে, এমন মিথ্যা এবং বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার করবেন না।এতে আপনাকে আইনি ব্যবস্থার মুখোমুখি হতে হবে।’’

এই ঘটনায় কটাক্ষ করেছে শাসক দল তৃণমূল।তৃণমূল জেলা সভাপতি অজিত মাইতি বলেন,”বিজেপি যে fake তা ধরা পড়ল অবশেষে।চন্দ্রকোনার মাংরুল এলাকার বিজেপি কর্মী তার ফেসবুক পেজে স্কুল সার্ভিস কমিশনের এসএলএসটি পরীক্ষার প্রশ্ন ও উত্তর নাকি পয়সা দিয়ে পাওয়া যাচ্ছে এই ধরনের মিথ্যে ও ভুয়ো খবর ছড়াচ্ছে।এই ধরনের সত্যি ফোন কল কখনও হতে পারেনা।তিনি এও বলেন বিজেপির দিল্লির অমিত মালব্য থেকে এই চন্দ্রকানার অরিন্দম পাল সবাই এই গুজব ছড়াতে ব্যস্ত।এইখানে বিজেপি,সিপিআইএম নেতারা সবাই এক।যাতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি এসএসসি পরীক্ষা টা না করাতে পারে।তবে এই জন্য পুলিশ কে বিশেষ ধন্যবাদ।

যদিও এই বিষয়ে বিজেপি নেতৃত্ব বলে,” এই অরিন্দম পাল তাদের নামে তাদের কোনো বিজেপি কর্মী নেই।তাছাড়া এই ব্যক্তি কোনদিন বিজেপি করেছে বলে জানি না।ওনার সঙ্গে বিজেপির কোনও যোগ নেই। এটা তৃণমূল ইচ্ছে করে চাপিয়ে দিচ্ছে।তাছাড়া ও কেন এই সব পোস্ট করেছে বলতে পারব না।