
সিমলিপাল 5 ই ডিসেম্বর:
এক বছর আগে এই বাঘিনীর তাণ্ডবে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে জঙ্গলমহল।গত ডিসেম্বরে ভরা শীতের মরশুমে বাঘের ভয়ে কাঁপছিল ঝাড়গ্রাম পুরুলিয়া বাঁকুড়া সহ জঙ্গলমহল এলাকা। জিনাত কে বাগে আনতে হাড়-কাঁপানো ঠান্ডাতেও ঘাম ঝরেছিল বনকর্মীদের। টানা দশদিন বাংলায় দাপিয়ে বেড়িয়েছিল ওড়িশার সিমলিপালের বাঘিনি জিনাত।শেষমেশ রাজ্য বনদপ্তর তাকে সুরক্ষিতভাবে ওড়িশায় ফিরিয়ে দেয়।

বছর খানেক আগে রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছিল এই বাঘিনী,কিন্তু এক বছরের মধ্যে নিজের আস্তানায় ফিরে শান্ত হলো সে।নিশ্চিন্তে শিকার করে দিব্যি কাটাচ্ছে জিনাত। জিনাতের গল্প বলতে গিয়ে বলা যায়,গত বছর ১৫ নভেম্বরে মহারাষ্ট্রের তাডোবা থেকে জিনাত ও যমুনা নামে দুই বাঘিনিকে নিয়ে আসা হয়েছিল সিমলিপালে।তখন তাদের বয়স তিন বছর। দশদিন বাদে সিমলিপাল ব্যাঘ্র প্রকল্পের সংরক্ষিত বনাঞ্চলে তাদের ছাড়া হয়।সেখানে দিন কয়েক কাটিয়ে জিনাত হঠাৎ উধাও হয়ে যায়।এরপর গত বছরের ৭ ডিসেম্বর জিনাত কে আর সিমলিপাল টাইগার রিজার্ভের জঙ্গলে পাওয়া যায়নি। ততক্ষণে সে ঝাড়খণ্ডের দিকে আগুয়ান ওড়িশা ঝাড়খণ্ড ঘুরে ঢুকে পড়ে বাংলায়।সেদিন ছিল ২০ ডিসেম্বর ২০২৪ সাল।ঝাড়গ্রামে বাঘের আতঙ্ক ছড়িয়ে পুরুলিয়া, বাঁকুড়ার বিস্তীর্ণ অঞ্চল সহ গোটা জঙ্গলমহল এলাকায় চক্কর কাটতে থাকে সিমলিপাল ছুট বাঘিনি।

শয়ে শয়ে বনকর্মীকে নাকানি-চোবানি খাইয়ে গত বছরের ২৯ ডিসেম্বর দুপুরে বাঁকুড়ার জঙ্গলে ঘুমপাড়ানি গুলিতে সে কাবু হয়। জিনাতকে খাঁচায় পুরে আলিপুর চিড়িয়াখানায় এনে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়।১ জানুয়ারি তাকে সুরক্ষিতভাবে ওড়িশায় ফিরিয়ে দেয় রাজ্য বনদপ্তর।তারপর বেশ কিছু দিন তাকে ওড়িশার সিমলিপাল টাইগার রিজার্ভে বিশেষ পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছিল। অবশেষে সিমলিপাল জঙ্গলে ছাড়া হয়।যদিও এই বিষয়ে ওড়িশার বনমন্ত্রী গণেশরাম খুঁটিয়া সংবাদ মাধ্যমে জানিয়েছেন“জিনাত এক মাস ঘরছাড়া ছিল।তাই শঙ্কা ছিল, হয়তো সে আবার বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবে। তবে করেনি।” তিনি আরও জানান,“সিমলিপালে ফেরার পরে প্রথমদিকে জিনাত একটু ভয়ে থাকত।পরে অবশ্য তা কেটে যায়।তবে ঘরছাড়া হয়ে ফিরে এসে তার চরিত্রে অনেক বদল এসেছে।এখন অনেক শান্ত,আগের মতো চঞ্চল নয়। মেজাজও অনেক শরিফ।

সে বুঝে গিয়েছে, সিমলিপাল জঙ্গলই ওর ঠিকানা।এখান কার পরিবেশে খাপ খাইয়ে নিয়েছে।আর নিজের সীমানার বাইরে পা রাখেনি।জঙ্গলের কোর এলাকায় সে শিকার করছে। দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছে।যদি আগামী দিনে সে তার স্বভাব চেঞ্জ করে কিনা সেটাই দেখার।”