AI IVF:কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে আইভিএফ করলেন চিকিৎসরা!AI পদ্ধতিতে প্রথম মানব শিশুর জন্ম?

Share

নিজস্ব প্রতিনিধি,মেদিনীপুর:

গোটা বিশ্বজুড়ে এআইয়ের দাপাদাপি।কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা AI দ্বারা কত কিছুই না হচ্ছে।হাজার হাজার কিলোমিটার দূরে বসে জটিল অস্ত্রোপচার নিমেষে সেরে ফেলছেন চিকিৎসকেরা। এআই পরিচালিত রোবট হেঁটে চলে ঘুরে বেড়িয়ে দিব্যি ঘরের কাজকর্ম সেরে ফেলছে। সিনেমাজগৎ থেকে সাহিত্য, চিকিৎসাবিজ্ঞান, সবেতেই প্রভাব খাটাচ্ছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স। গান, কবিতা লেখা বা যন্ত্রমানবের লহমায় জটিল ধাঁধার সমাধান করে ফেলা এক জিনিস, তাই বলে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তায় সন্তানের জন্ম দেওয়াও সম্ভব? তেমনই করে দেখিয়েছেন নিউ ইয়র্ক ও মেক্সিকোর একদল চিকিৎসক।

মূলত সাধারণ আইভিএফ পদ্ধতি বার বারই ব্যর্থ হচ্ছিল। পরে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে আইভিএফ করেন চিকিৎসকেরা। আর ওই পদ্ধতিতেই পুত্রসন্তানের জন্ম দেন ৪০ বছরের এক মহিলা।এরপর সম্প্রতি রিপ্রোডাকটিভ বায়োমেডিসিন অনলাইন’ জার্নালে একটি গবেষণার খবর বেরিয়েছে, যা চমকে দেওয়ার মতোই। গবেষকেরা জানিয়েছেন,কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা পরিচালিত আইভিএফ (ইন-ভিট্রো ফার্টিলাইজ়েশন) পদ্ধতিতে বিশ্বের প্রথম মানবশিশুর জন্ম হয়েছে।দাতার শরীর থেকে শুক্রাণু বেছে নেওয়া,সেই শুক্রাণু ও ডিম্বাণুর নিষেক ঘটিয়ে ভ্রূণ তৈরি করার পদ্ধতিটি এআই-এর সাহায্যেই সেরেছেন চিকিৎসকেরা।আর এতে এক বারের জন্যও ব্যর্থতা আসেনি।সুস্থ পুত্রসন্তানের জন্ম দিয়েছেন একজন মহিলা।এআই পরিচালিত আইভিএফ চিকিৎসাবিজ্ঞানের জগতে নতুন মাইলফলক বলেই দাবি করেছেন তাঁরা।

বছর চল্লিশের মহিলার আইভিএফ বার বার ব্যর্থ হচ্ছিল। তার পরেই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যেই আইভিএফ করার সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকেরা। ‘ভিট্রো’ শব্দটির অর্থ ‘শরীরের বাইরে’। এই পদ্ধতিতে শরীরের বাইরে জীবন সৃষ্টি করা হয় বলে পদ্ধতিটিকে ‘ইন-ভিট্রো ফার্টিলাইজ়েশন’ বলা হয়। চলতি কথায়, টেস্টটিউব বেবি। চিকিৎসক জ্যাকাস কোহেন জানিয়েছেন, ওই মহিলার পাঁচটি ডিম্বাণু নিয়ে পরীক্ষাটি শুরু হয়। দাতার শরীর থেকে নেওয়া শুক্রাণু ইনজেক্ট করা হয় ডিম্বাণুতে। এই প্রক্রিয়াকে বলে ‘ইনট্রাসাইটোপ্লাজ়মিক স্পার্ম ইঞ্জেকশন’ (আইসিএসআই)। আর সেই পদ্ধতিটির জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্য নেওয়া হয়। শুক্রাণু বেছে নেওয়া ও সেগুলিকে ডিম্বাণুতে ইনজেক্ট করার পদ্ধতিটি পুরোটাই এআই দিয়ে করেন চিকিৎসকেরা। এতে গোটা পদ্ধতিটিই নির্ভুল ভাবে হয় এবং সঠিক সময়ে নিষেক প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।

পাঁচটির মধ্যে চারটি ডিম্বাণুই নিষিক্ত হয়। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, এই পদ্ধতিটিকে বলা হচ্ছে ‘অটোমেটেড আইভিএফ’, যাতে ভুল হওয়ার আশঙ্কা প্রায় নেই বললেই চলে।বর্তমান বিশ্বে বন্ধ্যাত্বের সমস্যা বাড়ছে। জীবনযাত্রা ও খাদ্যাভ্যাসের কারণেও সন্তানধারণে সমস্যা হচ্ছে। ফাইব্রয়েড, এন্ডোমেট্রিয়োসিস বা পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোমে ভুগছেন যাঁরা, তাঁদের মধ্যে বন্ধ্যাত্বের সমস্যা বেশি। শুক্রাণুর অস্বাভাবিকতা, ডিম্বাশয়, ডিম্বনালি বা জরায়ুর সমস্যা, ডিম্বাণু নিঃসরণে অসুবিধা, এক্টোপিক প্রেগন্যান্সির ক্ষেত্রেও গর্ভধারণে সমস্যা হয়।

সে সব ক্ষেত্রে আইভিএফ পদ্ধতিই হল বিকল্প উপায়। তবে এই পদ্ধতিও সব সময়ে সফল হয় না। ব্যর্থতার ঝুঁকিও বেশি। তাই সে ক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা পরিচালিত আইভিএফে ভুলত্রুটি কম হবে বা একেবারেই হবে না বলেই আশা গবেষকদের।





Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

dnews.in