
নিজস্ব প্রতিনিধি,ঝাড়গ্রাম:
প্রেমিকার অন্যত্র বিয়ে হওয়ায় গলায় গামছা ফাঁস নিয়ে আত্মঘাতী যুবক।সেই ঝুলন্ত অবস্থায় নাতি কে দেখে মৃত্যু হল তার ঠাকুমার। মৃত যুবকের নাম শুভঙ্কর মাহাতো (২৪), মৃত ঠাকুমার নাম কমলা মাহাতো (৬২)।বাড়ি ঝাড়গ্রাম থানার অন্তর্গত ছোট পারুলিয়া গ্রামে।সোমবার দুপুরে দেহ ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে আসা হয় ঝাড়গ্রাম জেলা পুলিশ মর্গে।

পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে,গত রবিবার সন্ধ্যায় বাড়ির মধ্যে গলায় গামছার ফাঁস লাগিয়ে ফ্যানে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখা যায় ওই যুবককে।মৃত নাতির এই অবস্থা দেখে অজ্ঞান হয়ে পড়ে ঠাকুমা।এরপর দু’জনকে উদ্ধার করে মোহনপুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক দু’জনকে মৃত ঘোষণা করে।পরিবারের দাবি,তার প্রেমিকার সঙ্গে ফোনে বচসা হয় ওই যুবকের।তারপর ঘরে ঢুকে বাড়ির দরজা বন্ধ করে দেয়।দীর্ঘ ডাকাডাকির পর কোন উত্তর না পেয়ে একতলা পাকা বাড়ির লোহার দরজা ভাঙলে দেখা যায় গামছার ফাঁস লাগিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় রয়েছে।পরিবারের সকল সদস্যদের চিৎকার শুনে ছুটে আসে ঠাকুমা।নাতিকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখে অজ্ঞান হয়ে পড়ে।

প্রসঙ্গত,একটি ঠিকাদারি সংস্থার সিভিল ইঞ্জিনিয়ারের পদে কর্তব্যরত ছিলেন ওই যুবক।গ্রামবাসী সূত্রে জানা গিয়েছে,ওই যুবকের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে একটি মেয়ের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সম্প্রতি মেয়েটির অন্য জায়গায় বিয়ে হয়ে যাওয়ায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে সে।প্রেমিকার বিয়ে কোনভাবেই মেনে নিতে পারেনি। গতকাল এই মৃত যুবকের সঙ্গে বচসা হয় তার প্রেমিকার। তারপরেই অভিমানে যুবক আত্মঘাতী হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।যদিও পরিবারের দাবি,তার প্রেমিকার বিয়ে হয়েছে কি না তা তারা কিন্তু জানে না।কিন্তু কোন এক মেয়ের সঙ্গে প্রেম ছিল সেই সম্পর্কে তারা নিশ্চিত।

মৃত যুবকের কাকু রুদ্র নারায়ন মাহাতো বলেন,”আমরা যতদূর জেনেছি গতকাল তার প্রেমিকার সঙ্গে ফোনে বচসা হয় তারপর সে বাড়িতে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেয়।দরজা দীর্ঘক্ষণ না খোলায় আমরা লোহার দরজা ভেঙে দেখি গামছার ফাঁস লাগিয়ে ফ্যানের মধ্যে ঝুলন্ত অবস্থায় রয়েছে।তাকে দেখে অজ্ঞান হয়ে যায় আমার মা।এরপর দু’জনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত বলে”।

ঝাড়গ্রাম ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের ব্লক সভাপতি নরেন মাহাতো বলেন,”সকালে ঘটনাটা শুনেছি খুবই দুঃখজনক।এই বয়সের ছেলে মেয়েদের আবেগটা অনেক বেশি।তাই তাদের উপর মা বাবার সব সময় নজর রাখা উচিত।অন্যমনস্ক দেখলেই তাদের সঙ্গে কথা বলে তাদের মনের কথা জানার চেষ্টা করতে হবে।তাহলে হয়তো আগামী দিনে এই ধরনের ঘটনা রোধ করা যাবে।ঝুলন্ত অবস্থায় যুবককে দেখে তার ঠাকুমারও মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাটা খুবই দুঃখজনক”।