
নিজস্ব প্রতিনিধি,ঘাটাল:
বানভাসি পরিস্থিতির মধ্যেও নিজের কাজে অনড় স্বাস্থ্যকর্মীরা।এই কয়েকদিনে মোট ১০৯ জন গর্ভবতী মাকে উদ্ধার করে ৬৪ জনকে সুস্থ স্বাভাবিক ডেলিভারি করালো জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর।এছাড়া সাপে কাটা রোগীর সংখ্যা ২৩ জন।যাদের সঠিক সময়ে এন্টিভেনাম দিয়ে দুর্ঘটনার হাতে রক্ষা করেছে জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর।

একদিকে বন্যার জলে যখন হাবুডুবু ঘাটাল ও ঘাটালের বিস্তীর্ণ এলাকা তখন অন্যদিকে সেই পরিস্থিতির কয়েক দিনের মধ্যেই দিনরাত পরিশ্রম করে প্রায় ৬৪ জন প্রসূতি সুস্থ নিরাপদ ভাবে ডেলিভারি করালো,জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর যা নিয়ে রীতিমতো খুশি স্বাস্থ্য আধিকারিক।মূলত গত কয়েকদিন আগে টানা বৃষ্টিতে জলমগ্ন হয়ে পড়ে পশ্চিম মেদিনীপুরের শেষ প্রান্ত ঘাটাল ডিভিশনের বিস্তীর্ণ এলাকা।প্রথমে চন্দ্রকোনা গড়বেতায় জল প্লাবিত হওয়ার পর সেই জল নামলে ঘাটাল এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়ে। ঘাটালের গ্রামীণ এলাকা সহ ডুবে যায় পৌরসভা এলাকা।সেই এলাকায় মানুষ নৌকায় করে যাতায়াত শুরু করে।যদিও এই ঘটনায় প্রশাসন তড়িঘড়ি বেশ কিছু ত্রানশিবির খাবারদাবার এবং ডুবে যাওয়া বানভাসি মানুষদের ত্রাণ শিবিরে নিয়ে যান।এই পরিস্থিতিতে একদিকে যখন ত্রাণ দিয়ে উদ্ধারকার চালাচ্ছে প্রশাসন অন্যদিকে তখন জলমগ্ন এলাকায় প্রসূতিমাদের নৌকা এবং ভেলায় করে উদ্ধার করে সুস্থ ভাবে ডেলিভারি করালো জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর।

জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্র অনুযায়ী এই কয়েকদিনে প্লাবিত এলাকায় এখনো পর্যন্ত পঁচিশটা সেন্টার জলমগ্ন রয়েছে ঘাটাল এলাকায়। ১২৪টি গ্রাম আক্রান্ত হয়েছিল এই বৃষ্টির জলে যাতে ১৪৮০ জনকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।ঘাটালের বিভিন্ন জায়গা মিলিয়ে প্রায় ১৯ টি ক্যাম্প চলছে স্বাস্থ্য দপ্তরের ৩২ টি টিমের মধ্য দিয়ে।এই কয়েকদিনে মোট ১০৯ প্রসূতি মাকে আমরা সরিয়ে নিরাপদ স্থানে এনেছি যার মধ্যে ৬৪ জন মায়ের ডেলিভারি সুস্থ ও স্বাভাবিক ভাবে হয়েছে এবং শিশু ভালো রয়েছে। এছাড়াও কয়েক দিনে মোট ২৩ টি সাপের কামড় ঘটেছে এলাকায় যাদের অ্যান্টিভেনাম দেওয়ার ফলে সকলে সুস্থ রয়েছেন,মারা যাওয়ার কোন খবর নেই। পাশাপাশি এখন পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক হচ্ছে।ধীরে ধীরে জল নেমে গিয়েছে।তবে এই জলের ফলে যে ডায়রিয়া এবং পেট খারাপ বা শরীর খারাপের সমস্যা হচ্ছে সেগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে।টিউবওয়েল এবং পানীয় জল পরিশোধনের কাজ চলছে।এলাকায় এলাকায় ব্লিচিং এবং ওয়ারেস সহ যাবতীয় পরিষেবা দেওয়ার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা।

এ বিষয়ে জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক সৌম্য শংকর সড়ঙ্গী বলেন,”বিগত বছরের ন্যায় এ বছরও রাত দিন এক করে স্বাস্থ্যকর্মীরা এলাকায় পড়ে রয়েছে। সবচেয়ে উল্লেখ যোগ্য হল এই বানভাসি পরিস্থিতিতেও প্রসূতি মাদের উদ্ধার করেছে ভেলায় এবং নৌকায় করে। আমরা এই ডিভিশনে প্রায় ১০৯ জন গর্ভবতী মাদের উদ্ধার করেছি নিরাপদে।তাদের মধ্যে ৬৪ জনের সুস্থ স্বাভাবিকভাবে ডেলিভারি সম্পন্ন হয়েছে এবং যাদের বাচ্চা ও মা সুস্থ স্বাভাবিক রয়েছে। তবে ২৩ জনের মোট সাপে কামড় ঘটেছে এলাকায় যাদের অ্যান্টিভেনামে সকলেই সুস্থ।

যদিও এখন জল নেমে গেলেও ডায়রিয়া ও পেট খারাপের সংখ্যা বাড়ছে এলাকায়।সেই ক্ষেত্রে আমরা পানীয় জল শুদ্ধ করণের পাশাপাশি ORS সহ যাবতীয় পরিষেবা দিয়ে যাচ্ছি এলাকায়।