
নিজস্ব প্রতিনিধি,খড়গপুর:
এবার ছাত্র মৃত্যুতে নড়েচড়ে বসলো দেশের সর্বোচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খড়্গপুর আইআইটি। মনোরোগ বিশেষজ্ঞ,পদস্থ পুলিশ আধিকারিক সহ প্রাক্তনীদের নিয়ে গঠিত হলো এক দশ সদস্যের কমিটি। এই ছাত্র মৃত্যু নিয়ে তার রহস্য উদঘাটনের দায়িত্ব দেওয়া হলো এই কমিটিকে।

একে একে মেধাবী পড়ুয়ার অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘটে চলেছে দেশের সর্বোচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খড়গপুর আইআইটি তে।তাই এবার প্রশ্নের মুখে বারে বারে পড়ে শেষ পর্যন্ত ১০ সদস্যের একটি কমিটি গড়ল খড়গপুর আই আই টি।মূলত চলতি বছরের প্রথম ৫ মাসেই ৩ পড়ুয়ার অস্বাভাবিক মৃত্যু আইআইটি খড়্গপুরে।গত ৩ বছরের পরিসংখ্যান ধরলে এই সংখ্যাটা ৬ জনের বেশি।এর মধ্যে ক্যাম্পাসের হোস্টেলেই মৃত্যু হয়েছে ফাইজান আহমেদ, কে.কিরণ চন্দ্রা,দেবীকা পিল্লাই,সাওন মালিক,অনিকেত ওয়ালকার এবং শেষে মহম্মদ আসিফ কামারের। স্বাভাবিকভাবেই পড়ুয়া থেকে শুরু করে অভিভাবকরা রীতিমতো আতঙ্ক হয়ে পড়েছেন এই ঘটনায়।দেশজুড়ে বিভিন্ন মহলেই প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হচ্ছে আইআইটি খড়্গপুর কর্তৃপক্ষকে।কেন বারে বারে এই মেধাবী পড়ুয়ারা মারা যাচ্ছেন তা নিয়েও খতিয়ে দেখছিল আইআইটি কর্তৃপক্ষ।

তাই তারা পড়ুয়াদের মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য অত্যাধুনিক জেন লাউঞ্জ থেকে কাউন্সেলিং-র নানা ব্যবস্থা করে। কিন্তু তাতেও সমস্যার সমাধান হয়নি,বরং মাত্র চার মাসের ব্যবধানে মৃত্যু হয়েছে সাওন মালিক (১২ জানুয়ারি), অনিকেত ওয়ালকার (২০ এপ্রিল) এবং আসিফ কামার (৪ মে)-র। তাই এবার বাধ্য হয়ে বিশেষ দশজনের এক কমিটি গড়লো তারা।

শনিবার রাতে একটি প্রেস বিবৃতির মাধ্যমে আইআইটি খড়্গপুরের তরফে জানানো হয়েছে,এই ১০ জনের কমিটিতে মনরোগ বিশেষজ্ঞ মনোবিদ থেকে পুলিশ আধিকারিক,আইনজ্ঞ, শিক্ষাবিদ থেকে প্রাক্তনীদের প্রতিনিধি। এই কমিটি গত কয়েক মাসে তথা সাম্প্রতিক সময়ে আইআইটি খড়্গপুরে ঘটে যাওয়া পর পর ছাত্রমৃত্যুর রহস্য উদঘাটন করবেন।এজন্য তাঁরা কথা বলবেন আইআইটি খড়্গপুরের পড়ুয়া, অধ্যাপক, শিক্ষাকর্মী থেকে শুরু করে নিরাপত্তাকর্মীদের সাথেও। ঠিক কি কারণে এই ঘটনা ঘটছে, এই ধরনের ঘটনা প্রতিহত করতে যে উদ্যোগ না হয়েছে, তা অদৌ কতখানি ফলপ্রসূ বা কার্যকরী হচ্ছে সেই সমস্ত বিষয়গুলি এই কমিটি পর্যালোচনা করবে বলে জানিয়েছেন আইআইটি খড়্গপুরের এক জনসংযোগ আধিকারিক।যদি এই বিষয়ে কমিটির নেতৃত্বে ভারপ্রাপ্ত ডিরেক্টর অমিত পাত্র আছেন বলেও জানা গেছে। আগামী ৩ মাসের মধ্যেই এই কমিটি একটি যথাযথ রিপোর্ট দেবে বলে এদিন জানানো হয়েছে আইআইটি খড়্গপুরের তরফে।

উল্লেখ্য,গত ২০ এপ্রিল অনিকেত ওয়ালকার নামে ওশেন ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড নোভাল আর্কিটেকচার বিভাগের চতুর্থ বর্ষের মেধাবী পড়ুয়ার ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করা হয় জগদীশচন্দ্র বসু হলের সি-২১৪ রুম থেকে। অনিকেত মহারাষ্ট্রের রামনগর থানা এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। এর মাত্র দু’সপ্তাহের মধ্যেই গত রবিবার (৪ মে) বিহারের শিওহর জেলার বাসিন্দা তথা সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং-র তৃতীয় বর্ষের ছাত্র মহম্মদ আসিফ কামারের ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার হয় আইআইটি খড়্গপুরের মদনমোহন মালব্য হলের ১৩৪ নম্বর রুম থেকে। এই দু’টি ক্ষেত্রেই পুলিশি তদন্তে উঠে এসেছে আত্মহত্যা বা আত্মঘাতী হওয়ার তত্ত্ব।