
খড়্গপুর 21 সে সেপ্টেম্বর:
ফের ছাত্র মৃত্যু দেশের শীর্ষস্থানীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে।চলতি বছরে ছয় ছাত্রের মৃত্যুতে চাঞ্চল্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জুড়ে। যদি ওই দিন দেহ সনাক্ত করে দেহ নিতে এসে ছাত্রের পিতা বলেন হতভাগ্য পিতা আমি,আমার বড় ক্ষতি হয়ে গেল কিন্তু আমার ছেলে সুসাইড করেছে বলে আমার মনে হয়।আমার কোন অভিযোগ নেই আইআইটির বিরুদ্ধে।

আইআই টিতে ছাত্র মৃত্যু যেন কমছেই না,ফের ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার খড়্গপুরে। জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এখনো পর্যন্ত মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়ালো ৬ জনের।মূলত শনিবার দুপুর ২টো নাগাদ বি.আর আম্বেদকর হল থেকে ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করে খড়্গপুর টাউন থানার অধীন হিজলি ফাঁড়ির পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মৃত পড়ুয়ার নাম হর্ষ কুমার পান্ডে (২৭)। পুলিশ ও আইআইটি সূত্রে জানা গেছে, ঝাড়খণ্ডের রাঁচির বারিয়াতু থানা এলাকার বাসিন্দা হর্ষকুমার পান্ডে ২০২৪ সালে এলাহাবাদের মতিলাল নেহেরু ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি এম.টেক করার পর আইআইটি খড়্গপুরের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে পিএইচডি (গবেষণা) করার জন্য ভর্তি হন। তাঁর বাবার নাম ড. মনোজকুমার পান্ডে। এদিন দুপুরে বাবা ছেলেকে ফোনে না পাওয়ায়, আইআইটি খড়গপুরের নিরাপত্তাকর্মীদের সাথে যোগাযোগ করেন।

তাঁরা গিয়ে দেখেন, হর্ষের রুম লাগানো। এরপরই হিজলি পুলিশকে খবর দেয় আইআইটি খড়্গপুর কর্তৃপক্ষ। তারপরই বেলা ২টো নাগাদ দেহ উদ্ধার করে পাঠানো হয় আইআইটি খড়্গপুরের বিসি রায় হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন।এরপরই পরিবারকে খবর দেওয়া হয়।ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা পুলিশের এক আধিকারিক। রবিবার দুপুর নাগাদ মৃত বডি মেদিনীপুর হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়,পোস্টমর্টেম করার জন্য। এই বডির সঙ্গে আসেন পরিবারের লোকজন।তবে আইআইটি খড়্গপুরের তরফেও ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। এখনও বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি। উল্লেখ্য,এর ফলে চলতি বছরই ৬ জন পড়ুয়ার অস্বাভাবিক মৃত্যু হলো আইআইটি খড়্গপুরে।

এর মধ্যে পাঁচ জনের ক্ষেত্রেই ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার হলো। গত ১৮ জুলাই মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং-এর চতুর্থ বর্ষের ছাত্র তথা কলকাতার রিজেন্ট পার্কের বাসিন্দা ঋতম মণ্ডলের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছিল। এরপর, গত ২১ জুলাই রাতে গলায় ওষুধ আটকে মৃত্যু হয় মধ্যপ্রদেশের ছিন্দওয়াড়ার বাসিন্দা তথা ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং-এর দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র চন্দ্রদীপ পাওয়ারের।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, এই বছরের ২৩ জুন দায়িত্ব নেওয়ার পরই পড়ুয়াদের আত্মহত্যা রুখতে একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেন নতুন ডিরেক্টর সুমন চক্রবর্তী। সেতু অ্যাপ, মাদার ক্যাম্পাস সহ মানসিক স্বাস্থ্যের বিকাশের জন্য একাধিক উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। তাছাড়া স্বয়ং ডিরেক্টর নিয়মিত একটি করে হল (হোস্টেল) ভিজিট করতেন। পাশাপাশি গত ১০ সেপ্টেম্বর, বিশ্ব আত্মহত্যা প্রতিরোধ দিবসে পড়ুয়াদের সঙ্গে মশাল মিছিলে পাও মেলান সুমন চক্রবর্তী। তিনি নতুন পড়ুয়া সহ পণ্য পরুয়াদের উৎসাহ করতে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা শুরু করেন। তারপরও দুর্ঘটনা এড়ানো গেল না এরকম একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে।

এ বিষয়ে মৃত পড়ুয়ার বাবা মনোজ কুমার পান্ডে বলেন,”খড়গপুর আইআইটির উপর কোন অভিযোগ আমার নেই।কারণ আমার যা দেখে মনে হয়েছে তাতে মনে হয়েছে আমার ছেলে সুসাইড করেছে।। সিসিটিভিতে দেখেছি সাড়ে ছটা-সাতটা নাগাদ ও রুমে ঢুকেছে।তারপর ওকে নটা সাড়ে নটার দিকে ফোন করেছিলাম কিন্তু ও ফোন ধরে নি।এরপর আইটি থেকে একটি মেসেজ আছে এবং তাতে ঘোষণা করা হয় যে গলায় দড়ি নিয়ে ঝুলেছে।এখন আমি চাই আমি আমার ছেলের পার্থিব শরীর নিয়ে বাড়ি ফিরি।তবে এদিন হতভাগ্য পিতা এও বলেন আমার যা ক্ষতি হওয়ার হয়ে গিয়েছে। তবে তিনি এও বলেন ওর উপর কোন ধরনের বাড়ি থেকে কোন প্রেসার ছিল না ছিল না,ছিল না কোন নিজেদের মধ্যে বিবাদ।তবে কেন এই ধরনের ঘটনা ঘটালো তা বুঝতে পারছি না।