
নিজস্ব প্রতিনিধি,মেদিনীপুর:
বিজেপি সর্বভারতীয় নেতা দিলীপ ঘোষ কে ছবিতে জুতোর মালা দেওয়ার পর এবার তারই অনুগামী জেলা সভাপতি কে পার্টি অফিসে ঢুকতে বাধা।পার্টি অফিসের সামনে গাড়ি থামতে রে রে করে দৌড়ে গেল বিজেপি নেতাকর্মীরা।গাড়ি চাপড়ে,কাঁচ ভেঙে বিক্ষোভ।বেগতিক দেখে গাড়ি নিয়ে পালিয়ে প্রাণে বাঁচলেন বিজেপি জেলা সভাপতি।

একসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও দিলীপ ঘোষ ছিলেন দিঘার জগন্নাথ ধামে।এরই পাশাপাশি তারা একসঙ্গে কথা বলেছেন সেই সঙ্গে আলাপচারিতার ছবি প্রকাশ্যে আসতেই বিজেপির অন্দরমহলে শুরু হলো দলীয় কোন্দল।যার সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়ল পশ্চিম মেদিনীপুরে।গতকাল সিপাই বাজার বিজেপি জেলা পার্টি অফিসে তালা লাগানোর সঙ্গে দিলীপ ঘোষের ছবিতে জুতো দেওয়ার পর এবার দিলীপ অনুগামী জেলা সভাপতি কে পার্টি অফিসে ঢুকতে বাধা,মারধর করে তাড়িয়ে দেওয়া হল যা নিয়ে উত্তেজনা পশ্চিম মেদিনীপুরে।ঘটনা ক্রমে জানা যায় গতকালের ঘটনার পর দিলীপ ঘোষ এ দিন সকালবেলায় দীঘাতে দলের বিরুদ্ধে একের পর এক বোমা ফাটান।এরপর তিনি ফিরে যাওয়ার সময় কোলাঘাটে তাকে এক প্রস্থ বিক্ষোভ দেখান বিক্ষুদ্ধ বিজেপি কর্মী সমর্থক ও নেতৃত্ব।

পাশাপাশি গতকাল রাত থেকে এই পশ্চিম মেদিনীপুরের বিজেপি জেলা পার্টি অফিসে তালা লাগানোর পাশাপাশি দিলিপের ছবিতে জুতোর মালা দিয়ে মুর্দাবাদ স্লোগান দেন বিজেপি নেতাকর্মীরা।এরপর সকাল বেলায় সেই পার্টি অফিসে তালা তারা নিজেরাই খুলে দেন এই মর্মে যে দিলীপ ঘোষ একজন নেতৃত্ব মাত্র কিন্তু তাদের দলের বিরুদ্ধে কোন ক্ষোভ নেই।এরপর তারা কানাঘুষো শুনতে পান দিলীপ অনুগামী জেলা সভাপতি সিপাই বাজার পার্টি অফিসে আসছেন দুপুর বেলা।সেই মতো এদিন দিলীপ বিক্ষুব্ধ বিজেপি কর্মী সমর্থকরা পার্টি অফিসে জড়ো হতে থাকেন।প্রথমে দুপুরে একটা নাগাদ আসার কথা থাকলেও পরে দুটো বেজে যায়। তবুও জেলা সভাপতি আসেন না পার্টি অফিসে।এরপর দুপুর তিনটে নাগাদ বিজেপির জেলা সভাপতি সমিত মন্ডল পার্টি অফিসে গাড়িতে করে এসে নামার সময় ঢুকতে গেলে তাকে বাধা দেন বিক্ষুব্ধ বিজেপি নেতাকর্মীরা।

তারা কেন পার্টি অফিসে যাবেন এবং দিলীপ ঘোষ কেন এ কথা বলেছেন তার কারণ জিজ্ঞাসা করেন।এই কথাবার্তার মধ্যেই বিজেপি জেলা সভাপতি ও তারা লোকজনদের সঙ্গে গন্ডগোলে জড়িয়ে পড়ে বিক্ষুব্ধ বিজেপি নেতা কর্মীরা।এরপরে হাতাহাতি এবং শেষ পর্যন্ত গাড়িতে উঠে পড়েন বিজেপি জেলা সভাপতি।তার পিছন পিছনে ধাওয়া করে বিজেপি বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা তারা গাড়ি চাপড়ে রীতিমতো হুমকি সুরে মারধর করতে থাকে। এই ঘটনায় গাড়ির কাঁচ ভেঙে যায়।এই বেগতিক পরিস্থিতি দেখে গাড়ি নিয়ে সটান রওনা দেন বিজেপি জেলা সভাপতি।যদিও তার পিছনে পিছু ধাওয়া করে বিজেপি নেতাকর্মীরা।তাদের একটাই বক্তব্য দিলীপ ঘোষ যা কাণ্ডকারখানা করে চলেছেন তা অত্যন্ত নিন্দনীয়। এছাড়াও দিলীপ ঘোষ ইচ্ছে করে দলকে নষ্ট করছেন,দলের ক্ষতি করছেন তাই তারা দিলীপ ঘোষকে নেতা হিসেবে মানেন না এবং দিলীপ ঘোষের একান্ত ঘনিষ্ঠ এই জেলা সভাপতি কেও জেলা সভাপতি হিসেবে মানেন না।তাই তাকে পার্টি অফিসে ঢুকতে দেওয়া হবে না।

এই ঘটনায় বিক্ষুব্ধ বিজেপি নেতৃত্ব সুজয় দাস বলেন, “গতকাল আমরা দিলীপ ঘোষের ওই ঘটনার পর থেকেই আমরা বিজেপি অফিসে তারা লাগিয়ে দিয়েছিলাম রাগে ক্ষোভে।কিন্তু আমরা নিজেরাই তালা খুলে দিয়েছি।কারণ এটা বিজেপি পার্টি অফিস,দিলীপ ঘোষ এখানে একজন নেতা মাত্র।আজকে উনারই অনুগামী জেলা সভাপতি বিভিন্ন মন্ডল সভাপতিদের নিয়ে এখানে এসেছিলেন এই পার্টি অফিসে নিজেদের দখল করতে।আমরা তাই তাকে কারণ জানতে চেয়েছি এবং ঢুকতে দেইনি।আমরা মনে করি এই দিলীপ অনুগামী জেলা সভাপতি একজন সিপিএমের হার্মাদ এবং তৃণমূলের কট্টর সমর্থক।আমরা তাই উনাকেই পার্টি অফিসে ঢুকতে দেবো না।তাছাড়া দিলীপ ঘোষ হিরন চট্টোপাধ্যায় এর হয়ে একটাও সভা করেননি। খড়গপুরে কোন রকমই তিনি হিরনকে সাহায্য করেন নি।তাই দিলীপ ঘোষ কে আমরা কোনভাবে নেতৃত্ব হিসেবে মানছি না।

যদিও এই ঘটনায় বিজেপির জেলা সভাপতি সমিত কুমার মন্ডল বলেন,”গতকাল থেকে বেশ কিছু বিজেপি কর্মী নামে পরিচিত লোকজন আমাদের পার্টি অফিসে তালা দিয়ে দিয়েছে। আজকে যখন আমি দুপুরবেলায় পার্টি অফিসে ঢুকতে যাচ্ছিলাম মন্ডল সভাপতিদের নিয়ে সেই সময় আমাকে ধাক্কাধাক্কি এবং আমার গাড়ির কাঁচ ভেঙে দেওয়া হয়েছে।আমরা এই নিয়ে আইনত ব্যবস্থা নেব এবং দল যা নির্দেশ দেবে আমরা সেই মোতাবিক কাজ করব।