
নিজস্ব প্রতিনিধি,মেদিনীপুর:
মেদিনীপুর শহরে প্রায় 229 বছর প্রাচীন শ্রী জগন্নাথ দেব বলরাম এবং সুভদ্রার স্নানযাত্রা অনুষ্ঠিত হলো এদিন মহাসমারোহে।কংসাবতী নদী থেকে কলসি করে এইদিন পবিত্র জল এনে উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে স্নানযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়।আর্থিক কারণে এবং বয়েসের ভারে বেশ কিছু অনুষ্ঠান কাটছাঁট করলো বর্তমান কমিটির লোকজন।

শুরু হয়ে গেল বাংলা আর বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণের আরেক পার্বণ রথযাত্রা উৎসব।মূলত গ্রীষ্মের দাবদাহ শেষে বর্ষাকালের শুরুতেই এই রথযাত্রার অনুষ্ঠিত হয় বিভিন্ন ভিন্ন জেলা শহরে।এবারও তার ব্যতিক্রম নয়।এদিন মেদিনীপুর শহরে জগন্নাথ মন্দিরে প্রভু জগন্নাথ,বলরাম সুভদ্রা কে স্নানযাত্রার মধ্য দিয়ে শুরু হয়ে গেল ২০২৫ এর রথযাত্রার উৎসব।এদিন স্নান যাত্রার আগে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে কলসি করে মেদিনীপুরের কংসাবতী নদীর জল নিয়ে আসেন সেবায়েত ও ভক্ত জনেরা।এরপর তাতে ঘি দই দুধ মিশ্রিত করে বলরাম সুভদ্রা এবং জগন্নাথ দেব কে স্নান করানো হয়।এই স্নানযাত্রা ঘিরে মন্দির চত্বর ছিল ব্যাপক জনসমাগম।বেশির ভাগই ভক্ত এই দিন এই স্নানযাত্রার জল নিতে কৌটো,ডিব্বা নিয়ে হাজির হন।সেখানে ঢাক,বাদ্দি সহকারে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে স্নানযাত্রা সমাপ্ত ঘটে।

এ স্নানযাত্রা উপলক্ষে মন্দির থেকে জগন্নাথ দেব, বলরাম ও সুভদ্রা কে বের করে আনা হয়েছিল।উল্লেখ্য,প্রায় ২২৯ বছরে পদার্পণকারী এই জগন্নাথ দেবের উৎসব ঘিরে বেশ কিছু অনুষ্ঠান কাটছাঁট করেছেন বর্তমান কমিটির লোকজন।তাদের বক্তব্য বর্তমানে বয়সের ভারে তারা নুইয়ে পড়েছেন পাশাপাশি নতুন প্রজন্ম আসেনি তাদের কমিটিতে।সেই সঙ্গে রয়েছে আর্থিক বিষয় গুলিও।এরই সঙ্গে কোন আগামী রথযাত্রা পরিক্রমায় যাতে কোন রকম দুর্ঘটনা না ঘটে তা রোধ করার জন্য কিছু ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে কমিটির লোকজন।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য,এবারের রথযাত্রা শুরু হচ্ছে আগামি ২৭ সে জুন শুক্রবার ২০২৫ থেকে।এরপর ২৮ তারিখে প্রভুর বিশ্রাম।এরপর প্রতিদিন নতুন নতুন বেশে নতুন বাজার মাসি বাড়িতে হাজির হবেন তিন ভাই বোন।একে একে নারায়ণ বেশ,রাখাল রাজা বেশ,রাজ বেশ,বামন অবতার বেশ,রাম রাজা বেশ,অবশেষে কল্কি অবতার বেশে প্রভু অবতীর্ণ হবেন।শেষে ৫ই জুলাই শনিবার বিকেল পাঁচটা নাগাদ পুনরায় মাসির বাড়ি হতে প্রভু তার নিজ মন্দিরে ফিরে আসবেন।এবারে মেদিনীপুরে রথযাত্রা নিয়ে রুট করা হয়েছে জগন্নাথ মন্দির,স্কুল বাজার বটতলা, কেরানি তলা,ক্ষুদিরাম স্ট্যাচু ও এলআইসি মোড় রাজাবাজার গোলকুয়া চক হয়ে স্কুল বাজার এবং জগন্নাথ মন্দির হয়ে মাসির বাড়ি। যদিও ফিরতি রথের দিন একই পথ থাকছে।

এই নিয়ে কমিটির সম্পাদক পল্টু সেন বলেন,”আমরা বয়সের ভারে বেশ কিছু অনুষ্ঠান বাতিল করেছি।কারণ একদিকে সমস্ত অনুষ্ঠান আমরা করে উঠতে পারছিলাম না অন্যদিকে আর্থিক সমস্যা ও কিছুটা ছিল।তাছাড়া কোনরকম দুর্ঘটনা যাতে না ঘটে আমরা সব রকম ব্যবস্থা নিয়েছি।সমস্ত প্রশাসন আধিকারিকদের চিঠিও দেওয়া হয়েছে।যাতে আমাদের রথযাত্রার পরিক্রমা নিয়ে কোন রকম অসন্তুষ্টি বা গন্ডগোল না ঘটে।