
নিজস্ব প্রতিনিধি,মেদিনীপুর:
এবার খেলার মাঠে খেলা চলাকালীন রেফারিকে সজোরে লাথি মেদিনীপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান সৌমেন খানের ভাইপো রাজা খানের।যা নিয়ে ফের নতুন করে উত্তেজনা মেদিনীপুরে।যদি ওই ঘটনায় সোশ্যাল মাধ্যমে পোস্ট করে ধিক্কার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর।অন্যদিকে সকল সর্বস্তরে উঠেছে নিন্দার ঝড়।যদিও অভিযুক্তের বক্তব্য ভুল করে হয়ে গিয়েছে।

এবার খেলার মাঠে প্রকাশ্যে দেখা গেল এক তৃণমূল কর্মীর রেফারিকে লাথি মারার দৃশ্য যা নিয়ে ফের সরগরম মেদিনীপুর।যদিও এই ঘটনায় বিরোধী দলনেতা পোস্ট করার পরেই শুরু হয়েছে সমালোচনার ঝড়।শাসক তৃণমূল বিরোধী একযোগে সমালোচনা করেছেন এই ঘটনার।সূত্র অনুযায়ী স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে মেদিনীপুর শহরে শুক্রবার ওল্ড প্রদীপ সংঘের মাঠে ছোটদের ফুটবল খেলার আয়োজন হয়। সেখানে রেফারির ভূমিকা ছিলেন খড়্গপুর সাব-ডিভিশন রেফারি অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য তিনি,পেশায় স্কুলশিক্ষক লক্ষ্মণ মাণ্ডি।খেলা স্বাভাবিক গতিতেই চলছিল। হঠাৎই এই খেলার লাইভে ভিডিও দেখা যায় খেলা চলাকালীন হঠাৎই মাঠে ঢুকে পড়ে এই রাজা খান নামে তৃণমূল কর্মী। তিনি মেদিনীপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান সৌমেন খানের ভাইপো হন।ভরা মাঠে রেফারির সঙ্গে আঙুল উঁচিয়ে হুমকি দেওয়ার পাশাপাশি ধাক্কাধাক্কিও করতে দেখা যায়।

এই সময় মাঠে উপস্থিত অনেক খেলোয়াড় সহ বাকি রেফারিরা তাঁকে আটকানোর চেষ্টা করেছিলেন।কিন্তু লাভ হয়নি।একসময় রেফারি লক্ষ্মণ মাণ্ডি কে সজোরে লাথি মারেন তিনি।স্থানীয় সূত্রে খবর, একটি গোল কে কেন্দ্র করে বচসার সূত্রপাত হয়েছিল।সেই গোল বাতিল করানো হয়।অভিযোগ, রাজা গায়ের জোরে রেফারির উপর হম্বিতম্বি করে গোলটি বাতিল করিয়েছেন। যদিও এই ঘটনার পরই খেলায় ছেদ পড়ে। যদিও পরবর্তী কালে পুরস্কার বিতরণ শেষ হয়ে খেলার সমাপ্তি ঘটে। এরপরই এই ভিডিও তুলে সোশ্যাল মাধ্যমে পোস্ট করেন রাজ্যের বিরোধী নেতা শুভেন্দু অধিকারী।পাশাপাশি তিনি এই ঘটনার জন্য তীব্র নিন্দা জানান এবং জেলার পুলিশ সুপারকে তদন্ত করে গ্রেপ্তার করার আবেদন করেন। যদিও এর পর সোশ্যাল মাধ্যমে সকলেই পোস্ট করা শুরু করেন।এদিন বেলা হতেই রাজা খানকে গ্রেফতার করে পুলিশ করে মেদিনীপুর আদালতে।যদিও এইদিন মেদিনীপুর আদালত ২ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন অভিযুক্তকে।

এই নিয়ে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ফেসবুকে পোস্ট করে লেখেন,”রেফারিকে কুরুচিকর আক্রমণ তৃণমূলের সংস্কৃতি। তা ভোটের ময়দানে রেফারির ভূমিকায় থাকা জাতীয় নির্বাচন কমিশনকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আক্রমণই হোক বা স্থানীয় ফুটবল প্রতিযোগিতায় এই পুঁচকেপাঁচকা তৃণমূলী রাজা খান হোক।’’ শুভেন্দু জানিয়েছেন, ওই রেফারি তফসিলি উপজাতি সম্প্রদায়ভুক্ত। তফসিলি জাতি ও উপজাতি (অত্যাচার প্রতিরোধ) আইনে এবং ভারতীয় ন্যায় সংহিতার উপযুক্ত ধারায় অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করতে পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপারকে অনুরোধ করেছেন তিনি।

যদিও এই নিয়ে পাল্টা যুক্তি দিয়ে দেখিয়েছেন অভিযুক্ত রাজা খানের কাকা ওরফে মেদিনীপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান সৌমেন খান।তিনি বলেন মাঠে যে ঘটনা ঘটেছে তার জন্য তাকে অবশ্যই মাঠে ক্ষমা চাওয়া উচিত এবং পরস্পরের প্রতি যদি ভুল হয়ে থাকে তা ওখানেই মিটিয়ে নেওয়া উচিত।কারণ আমি এই ঘটনা আপনাদের মুখ থেকেই শুনেছি।তবে এক্ষেত্রে যদি রাজনৈতিক দল বা আমাদের নাম ধরে বিতর্ক শুরু হয় তাহলে মনে করব এটা প্রতিহিংসা পরায়ন ছাড়া অন্য কিছু নয়।

যদিও এই নিয়ে ধিক্কার ও নিন্দনীয় বলে বর্ণনা করেছেন শাসক দল।তৃণমূল জেলা সভাপতি তথা সিএবির সদস্য বিধায়ক সুজয় হাজরা বলেন যে ঘটনা ঘটেছে তা অত্যন্ত নিন্দনীয় এবং ধিক্কার জানানোর ভাষা নেই।কারণ একটা মাঠে রেফারি সিদ্ধান্তে চূড়ান্ত।অথচ কোন একটা বিষয় নিয়ে এই ধরনের ঘটনা ঘটে যাওয়া যা কখনোই সমর্থন যোগ্য নয়।তবে খেলার পর বা ওই সময় বিষয়টা নিজেদের মধ্যে মিটিয়ে ভুল বোঝাবুঝি মিটেয়ে নিলে বিষয়টা মিটে যেত।পাশাপাশি তিনি এই খেলার পুরস্কার বিতরণ নিয়ে তিনি বলেন আমরা ওই খেলার পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে যাইনি।আমি ও এলাকার এক বিধায়ক গিয়েছিলাম ওই মাঠে আরেকটি খেলার পুরস্কার বিতরণে বলে তিনি দায়িত্ব এড়িয়েছেন।

যদিও এই নিয়ে খোদ অভিযুক্ত বলেন,”খেলায় একটা ভুল হয়ে গেছে এটা আপনারা সবাই জানেন। যদিও এ নিয়ে অভিযুক্ত রীতিমত অনুতপ্ত তো নন বরং উল্টে কিছুটা মজার ছলেই বলেন এই অভিযোগ করে জেলার MLA সিট কনফার্ম করে দিলেন আপনারা।