
নিজস্ব প্রতিনিধি,সবং:
বেহাল রাস্তায় ঢুকলো না অ্যাম্বুলেন্স,বাঁশের দোলনায় করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে মৃত্যু দশম শ্রেণির ছাত্রীর।এলাকায় মানুষের বক্তব্য দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ জানিয়েও কোন সমাধান হয়নি।এরকম করে হয়তো মরতে হবে অনেককেই।পাল্টা মন্ত্রীর বক্তব্য একটা ঘটনা ঘটেছে কিন্তু যেভাবে দেখানো হচ্ছে সেই ভাবে নয়।

বাঁশের দোলায় করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে অসুস্থ রোগীকে এরকম ছবি দেখা গেল পশ্চিম মেদিনীপুরের সবং এলাকায়।খোদ রাজ্যের মন্ত্রী এলাকায় এই ধরনের ঘটনা ঘিরে ছড়িয়েছে চাঞ্চল্য যদিও মন্ত্রীর বক্তব্য একটু বেশি করে দেখানো হয়েছে এ ঘটনাকে।মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার সবং থানার ১০ নম্বর ভেমুয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের বসন্তপুর এলাকায়।মৃত ছাত্রীর বয়স ১৬ বছর।ওই ছাত্রী কেরুর হাইস্কুলের দশম শ্রেণীর ছাত্রী ছিল।ইতিমধ্যে এই ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। ঘটনাক্রমে জানা যায় গতকাল শনিবার দশম শ্রেণীর ওই ছাত্রী বাড়ির দোতালায় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করে। বিষয়টি পরিবারের সদস্যদের নজরে এলে তারা ওই অবস্থায় নামিয়ে তড়িঘড়ি তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হয়।কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়ায় রাস্তা।বেহাল রাস্তা হওয়ার কারণে ঢুকতে পারেনি অ্যাম্বুলেন্স।

তখনই স্থানীয় ও পরিবারের লোকজন দোলনায় করে কাঁধে ঝুলিয়ে নিয়ে যাওয়া হল ওই ছাত্রীকে।বেশ কিছুটা যাওয়ার পর পাকা রাস্তায় উপর দাঁড়িয়ে থাকা অ্যাম্বুলেন্স তুলে নিয়ে যাওয়ার পর হসপিটালে নিয়ে গেলে সেখানে চিকিৎসকরা ওই ছাত্রীকে মৃত বলে ঘোষণা করে।তবে স্থানীয়দের অভিযোগ রাস্তা বেহাল হওয়ার কারণে গাড়ি ঢুকতে পারেনি সেই কারণে অনেকটা সময় দেরি হয়ে গিয়েছে হসপিটালে আনতে। না হলে হয়তো বেঁচে যেত ওই ছাত্রী।প্রসঙ্গত উল্লেখ্য,এর আগেও ডেবরা দাসপুর নারায়ণগড় এলাকায়ও এই ধরনের ঘটনা দেখা যায়।যেখানে রাস্তা না থাকায় বাধ্য হয়ে বাঁশের ডুলি করে রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যায় এলাকার মানুষ।মানুষের অভিযোগ ছিল কয়েক কিলোমিটার রাস্তায় খারাপ তাই যানবাহন না ঢোকায় বাধ্য হয়েই তারা এই ব্যবস্থা নিয়েছে। যদিও এ নিয়ে রাজ্য রাজনীতির সরগরম এখন।

এ বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা শম্ভু চরণ সামন্ত বলেন,”১২-১৩ বছর ধরে এই কিলোমিটার খানেক রাস্তায় বেহাল রয়েছে।এর আগেও বামেদের জমানায় এ রাস্তা সারাই এর দিকে নজর দেয়নি কেউই।মেয়েটি কোন কারনে গলায় দড়ি নিতে যায় কিন্তু তা জানতে পেরে আমরা নামিয়ে তাকে সুস্থ করার লক্ষ্যে নিয়ে যেতে গিয়েছিলাম। কিন্তু কোন অ্যাম্বুলেন্স ঢুকতে পারেনি এই বেহাল রাস্তার জন্য বাধ্য হয়েই আমরা ওই বাঁশের ডুলি করেই নিয়ে গিয়েছি।এই রাস্তা নিয়ে বহুবার অভিযোগ করা হয়েছে পঞ্চায়েত সহ প্রশাসনকে কিন্তু কোনই ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।এরকম করে হয়তো অনেকেই মরতে হবে আগামী দিনে।”

যদিও এ বিষয়ে উল্টো সুর মন্ত্রীর মুখে।সবং বিধানসভার বিধায়ক তথা রাজ্যের সেচমন্ত্রী মানস রঞ্জন ভুঁইয়া বলেন,”গতকাল এই ধরনের একটা ঘটনা ঘটেছে। মেয়েটি কিছু সমস্যার জন্য গলায় দড়ি নিয়ে মরতে যায়। পরে তাকে পুলিশ প্রশাসন উদ্ধার করে পোস্টমর্টেম জন্য নিয়ে আসে।রাস্তা খারাপের যে অভিযোগ করছে তা ঠিক নয়। তবে বকলমে মন্ত্রী এবং স্বীকার করে নেন এলাকার ঘটনাটা সত্যি।তিনি এও বলেন বেশ কিছুটা অংশ রাস্তা খারাপ রয়েছে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী সেন্ট্রালের টাকা বন্ধ করে দেওয়া সত্ত্বেও কিলোমিটারের পর কিলোমিটার রাস্তা করে উন্নয়ন করে চলছে এলাকায়।তবে কতিপয় লোক যেভাবে রটাচ্ছে তা আদতে নয়।