নিজস্ব প্রতিনিধি,চন্দ্রকোনা রোড :
দীর্ঘ দু’বছর ধরে ছেলেকে নিয়ে ব্যাংকের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরছেন এক ডিভোর্সি মহিলা। স্বামী খোরপোষের টাকা দিলেও ব্যাংক কর্তৃপক্ষ দীর্ঘ টালবাহানায় আটকে রেখেছে।বারবার ব্যাংকের গাফিলতি শিকার হয়ে অবশেষে জেলা শাসকের দ্বারস্থ হয়েছেন মহিলা। এরই সঙ্গে তিনি আদালতের কড়া নাড়বে বলে জানিয়েছেন তার উকিলকে দিয়ে।
একসময় দুজন মিলে সংসার করেছেন হয়েছে একটি পুত্র সন্তান। কিন্তু তারপরেই বনিবনা না হওয়ায় আলাদা পথে হাঁটতে চেয়েছেন দুজনে। ইতিমধ্যে সংসার করার দৌলতে জমিয়ে খেলেছেন অনেক টাকা।কিন্তু দুজন দুই পথে হাঁটার ফলে ডিভোর্স হয়েছে দুজনের।স্বামী তার সামর্থ্যটুকু প্রাপ্য টাকা দিয়ে দিয়েছেন ব্যাংকে স্ত্রীরা একাউন্টে কিন্তু ব্যাংকের গাফিলতিতে বছর তিনেক ধরে ব্যাংকের দুয়ারে দুয়ারে এক ডিভোর্সি মহিলা।চাইছেন অবিলম্বে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তার সমস্ত টাকা মিটিয়ে দিক যাতে সে সংসার এবং ছেলেকে মানুষ করতে পারে। ঘটনাটি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনার ডাবচা এলাকায়।ওই মহিলার অভিযোগ ক্রমে জানা যায় ওই মহিলার স্বামী মেদিনীপুর মহিলা কো-অপারেটিভ ব্যাংকে MIS এ টাকা রাখেন।
এরপর তার একটি পুত্র সন্তানের জন্ম হয়।পরে বনিবনা না হওয়ায় ডিভোর্সের পথে হাঁটেন দুজনে।কিন্তু মিউচুয়াল ডিভোর্সে স্বামীর কাছে টাকা চেয়ে বসেন মহিলা এবং তাতেই রাজি হয়ে যায় স্বামী।তার MIS এর ২ লক্ষ টাকা তিনি স্ত্রীকে দিয়ে দেন সমস্ত কাগজপত্র সহ। যেহেতু তখন ম্যাচুরিটি হয়নি তাই ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জানায় অপেক্ষা করতে।কিন্তু ম্যাচুরিটি হওয়ার পর ব্যাংকে টাকা তুলতে গেলে বাঁধে বিপত্তি। সেই সময় কোর্ট কাছারি কেসে আটকে যায় ব্যাংকের কাজকর্ম।এরপর চন্দ্রকোনার ব্যাংকে না দিয়ে সরাসরি হেড ব্রাঞ্চ মেদিনীপুরে যোগাযোগ করেন ওই মহিলা।অবিলম্বে সুদ সহ ম্যাচুরিটি টাকা দেওয়ার আবেদন করেন তিনি।কারণ তিনি সংসার চালাতে এবং ছেলের পড়াশুনা করাতে হিমশিম খাচ্ছেন।কিন্তু ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন বাহানায় তাকে ঘুরিয়ে দেয়।মহিলার এও অভিযোগ মাঝে মাঝে ইন্টারেস্টের কিছু টাকা দিয়ে তাকে বাড়ি ফিরিয়ে দিয়েছে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।এরপর দীর্ঘ করোনা কালে হাতে টাকা না থাকায় ব্যাংকে অভিযোগ জানানোর পাশাপাশি দ্বারস্থ হন তিনি জেলা শাসকের কাছে।জেলা শাসককে অভিযোগ জানানোর পরও কেটে গেছে প্রায় দু বছর।এখনো পর্যন্ত ব্যাংক ঝুলিয়ে রেখেছে দিচ্ছে না টাকা কিছুতেই।এই অবস্থায় এবার কোর্টের দ্বারস্থ হতে চলেছেন মহিলা তার আইনজীবী মারফত।
এই দিন তিনি সংবাদ মাধ্যমের কাছে জানান বহুবার আবেদন নিবেদন করেছি কিন্তু সাড়া দেয়নি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। ব্যাংকে গেলেই বলে পরে আসতে। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ কে বহুবার ফোন করেছি কিন্তু ফোন কেটে দেয়।এখন আমি সংসার চালাতে পারছি না,পারছি না ছেলে পড়াশোনার খরচা জোগাতে। তাই এবার টাকা পেতে ভাবছি কোর্টের দ্বারস্থ হব।পুজো চলছে তাই পুজোর পর কোর্ট খুললেই আবেদন জানাবো ব্যাংকের বিরুদ্ধে টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার।
এ বিষয়ে এই মহিলার আইনজীবী সমরেশ চক্রবর্তী বলেন অবিলম্বে ব্যাংকের উচিত ছিল তার টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার।প্রায় সময় অভিযোগ উঠে স্বামী তার খোরপোষের টাকা দিচ্ছে না।কিন্তু এখানে স্বামী দেওয়ার পরই ব্যাংক সেই টাকা কিছুতেই দিচ্ছে না আমার মক্কেলকে।আমরা লোয়ার কোর্টের পাশাপাশি প্রয়োজন হলে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হব এবং অভিযোগ জানাবো ওই মহিলা কো-অপারেটিভ ব্যাংকের বিরুদ্ধে।
যদিও এ বিষয়ে ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে ফোন করা হলে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ফোন ধরেনি,দেয়নি কোন উত্তর।