Abul Kalam Azad: মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের হাসপাতালের মুখোমুখি পৌরসভার বরাতে সরকারি ডরমেটরিতে বেসরকারি নার্সিংহোম!শাসকদলের চেয়ার ম্যানের বিরুদ্ধে পোস্ট তৃণমূলের

Share

নিজস্ব প্রতিনিধি,মেদিনীপুর:

সরকারি ডরমেটরিটেতে একদম ঝাঁ চকচকে বেসরকারি নার্সিংহোম এর বরাত যা নিয়ে বিতর্ক শুরু মেদিনীপুর জেলা শহরে।পৌরসভার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গিয়ে জনমত তৈরি করতে সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব দলেরই কাউন্সিলর তথা শহর তৃণমূল কংগ্রেসের শহর সভাপতি।পুরসভার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন তিনি।এই ঘটনায় গোষ্ঠী কোন্দল প্রকাশ্যে শাসক দলের।যা নিয়ে বিতর্ক জেলায়।

নার্সিংহোম নিয়ে বিতর্ক

ঘটনাক্রমে বলতে গেলে বলা যায় একসময় মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের একদম উল্টোদিকে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীর আত্মীয়-স্বজনদের কম পয়সায় রাত কাটানোর জন্য তৈরি করে হয়েছিল দুটি আশ্রয়স্থল।এই দুটির নাম দেওয়া হয়েছিল একটি আবুল কালাম আজাদের নামে আরেকটি গান্ধী পুরো নিলয়ম নামে।যদিও বর্তমানে গান্ধী পুরো নিলয়মে রোগীর আত্মীয়-স্বজন বিপদে এবং রোগীকে ভর্তি করে আশ্রয় নিতে পারলেও পাশের অপরটি আবুল কালামের আজাদের নামে এই ডরমেটরিটি ভাড়া দিয়ে দেয় পৌরসভা।যদিও প্রথমে একটি সংস্থাকে দিলেও পরবর্তীকালে অন্য একটি নার্সিংহোম কে ভাড়া দেয় এই পৌরসভা।আর যা নিয়েই তৈরি হয়েছে শাসকদলের মধ্যেই গোষ্ঠী কোন্দল এবং বিতর্ক।খোদ জেলা সভাপতির কাছের এবং অনুগত,ওয়ার্ড কাউন্সিলর তথা তৃণমূলের শহর সভাপতি বিশ্বনাথ পাণ্ডব সোশ্যাল মিডিয়ায় পৌরসভার বিরুদ্ধে অভিযোগ লিখে বিতর্ক বাড়িয়েছেন।সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি এক ও একাধিক অভিযোগ শানিয়েছেন।

কোথাও তিনি লিখছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যের মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ এণ্ড হসপিটাল কত উন্নয়ন মানুষ পাচ্ছেন।তাঁর বিপরীতে পৌরসভার জায়গায় বেসরকারি নার্সিংহোম!অন্য একটি পোস্টে লিখেছেন, “মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সামনে পুরসভার বিল্ডিং তাতে বেসরকারি হসপিটাল!বোঝাই যাচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যের উন্নয়নের উপর আস্থা না রেখে বেসরকারি সংস্থাকে দেওয়া হাসপাতাল করতে দেওয়া হয়েছে!এর তীব্র নিন্দা করছি।এরই সঙ্গে তার বক্তব্য এর কি প্রতিবাদ হবে না? এমন একাধিক পোস্ট করেছেন এই শাসক দলের সভাপতি কাউন্সিলর বিশ্বনাথ পাণ্ডব।তৃণমূল কাউন্সিলরের পোস্ট ঘিরে চর্চা শুরু।

এই বিষয়ে মেদিনীপুর পৌরসভার পৌরপ্রধান সৌমেন খান বলেন,”এই পোস্ট কেন উনি করছেন সে বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারব না।তবে ওই পৌরসভার ডরমেটরিটি প্রয়াত প্রাক্তন চেয়ারম্যান প্রণব বসুর আমল থেকে ভাড়া দেওয়া হচ্ছে পুরসভার টাকা বরাদ্দে।এর আগে দুই সংস্থা চালাচ্ছিল ওই ডরমেটরিটি।এর থেকে পুরসভার মোটা টাকা আয়ও হচ্ছে। তবে তৃণমূলের কাউন্সিলর কেন এ ধরনের পোস্ট করেছে তা নিয়ে কিছু বলতে পারব না।

এই নিয়ে প্রতিবাদী কাউন্সিলর তথা মেদিনীপুর শহর তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি বিশ্বনাথ পাণ্ডব ক্যামেরার সামনে আসতে না চাইলেও তিনি বলেন,“আমাদের পুরসভায় সিদ্ধান্ত এক হয়,আর রেজুলেশনে লেখা হয় আরেক! ওসব আলোচনার কথা বলে লাভ নেই।শহরে একাধিক নার্সিংহোম থাকতেই পারে। তা বলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যের স্বপ্ন মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল,যেখানে মানুষ সমস্ত রকমের পরিষেবা বিনা পয়সায় পান,তার বিপরীতে পুরসভার ভবনে বেসরকারি নার্সিংহোম!এটা কি সরকারি স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উপর অনাস্থা প্রকাশ নয়।আমার মনে হয়েছে এটা ঠিক হয়নি,তাই আমি পোস্ট করেছি।“

যদিও এ বিষয়ে কিছুই জানিনা বলে মন্তব্য জেলা সভাপতির।মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি তথা মেদিনীপুরের নব্য বিধায়ক সুজয় হাজরা বলেন,”পুরসভার বিষয়ে আমি কোনও দিন ঢুকিনি।কী সিদ্ধান্ত হয়েছে তাও জানিনা।আমার কেউ কাছের না। আমাদের দলের শহর সভাপতি সোশ্যাল মিডিয়ায় কী পোস্ট করেছেন,কেন পোস্ট করেছেন তাও জানিনা।পুরো বিষয়টা খোঁজ নিয়ে তবেই বলতে পারব।

এ বিষয়ে কটাক্ষ করেছে বাকি দলগুলি।মেদিনীপুর বিজেপির মুখপাত্র অরুপ দাস বলেন,“পুরসভা নাগরিক পরিষেবা দেওয়া থেকে অনেক দূরে,রাস্তাঘাট, ড্রেনব্যবস্থা, যানজট বিষয় না দেখে,পুরসভার সম্পত্তি বিক্রি করে, ভাড়া দিয়ে রোজগারই মূল লক্ষ্য।না হলে একটা সরকারি ডরমেটরি কিভাবে বেসরকারি নার্সিংহোমকে ভাড়া দেয় শাসক দল তা নিয়ে খোদ প্রশ্ন তুলেছে তৃণমূলের কাউন্সিলার।এটা বড় লজ্জার ব্যাপার।সিপিএম কাউন্সিলর গোপাল ভট্টাচার্য্য বলেন,”পুরসভার এই বিল্ডিং ভাড়া দেওয়ার বিষয়ে কোনও দিন আলোচনা হয়েছে বলে আমার জানা নেই।কাকে কীভাবে ভাড়া দেওয়া হলো তা আমরা জানিও না।“

যদিও এ বিষয়ে নার্সিংহোমের মালিক ত্রিনাথ চ্যাটার্জী বলেন,”এর আগেও এই ডর্মেটোরিতে অন্য সংস্থা ভাড়ায় ছিল।এরপর পৌরসভা থেকে আমরা ভাড়ায় নিয়েছি পাঁচ বছরের জন্য।তাছাড়া মিউটেশনের জন্য আমরা টাকা খরচ করেছি সঙ্গে প্রতিমাসে ভাড়ায় চুক্তি হয়েছে। হাসপাতালের বিপরীতে নার্সিংহোম নিয়ে কেন শাসকদলের কাউন্সিলর এই ধরনের পোস্ট করছে তা বুঝতে পারছি না।


Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

dnews.in