নিজস্ব প্রতিনিধি,পিংলা:
খুনের আশঙ্কা প্রকাশে এবার দেবের বিরুদ্ধে অভিযোগ এবং গ্রেফতারের দাবী জানালো বিজেপি প্রার্থী হিরন চট্টোপাধ্যায়।মুলতবিপিংলাতে প্রচারে এসে হিরন চট্টোপাধ্যায় বললেন অবিলম্বে দেবের বিরুদ্ধে আমরা থানায় অভিযোগ করছি এবং দেব যেভাবে খুনের হুমকি দিচ্ছেন তাতে লজ্জার।একজন শিল্পী হিসেবে আমি লজ্জিত।
লোকসভা ভোটের আগে রাজ্য রাজনীতিতে সরগরম দেব আর হিরণ নিয়ে।যদিও গত মঙ্গলবার দেব এক সাংগঠনিক বৈঠক করতে এসে আতঙ্ক প্রকাশ করে বলেন,” হিরন যেভাবে রাজনীতি করছে এবং বিজেপি দল যেভাবে বাংলায় রাজনীতি করা শুরু করেছে তাতে আতঙ্কে রয়েছি,হয়তো কোনদিন বিজেপি নিজেরায় তাদের কর্মী খুন করে আমাদের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে দেবে”।এরই সঙ্গে তিনি পুলিশ প্রশাসনকে সতর্ক সচেতন করার আবেদন করেন।আর এই ঘটনায় শুরু হয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে জোর তোলপাড়।যদিও এই ঘটনার প্রেক্ষিতে বিজেপি প্রার্থী হিরণ চট্টোপাধ্যায় এবার ক্ষোভ প্রকাশ করলেন দেবের বিরুদ্ধে।গতকাল ঘাটাল লোকসভার অন্যতম বিধানসভা পিংলাতে প্রচারে গিয়ে পাল্টা মন্তব্য করলেন হিরণ চট্টোপাধ্যায়।তিনি বললেন,”একজন সাংসদ যিনি খুনের পরিকল্পনা করছেন তার বিরুদ্ধে আমরা এবার এফআইআর করছি।পাশাপাশি তিনি ও বলেন বিজেপি কাউকে যদি খুন করবে বলে তাহলে কি ওনাকে জানিয়ে করবে।এরকম ঘটনা বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে কোথাও হয়েছে বলেও তিনি আক্ষেপ করেন।
এরপর তিনি দেবের বিরুদ্ধে তোপ দেগে বলেন খুনের পরিকল্পনা ওনার,খুন করবেন বিজেপি কর্মীকে।তাই আমরা এখন আতঙ্কে রয়েছে এবং চাই নিরাপত্তা।আমরা নির্বাচন কমিশনকে বলবো আমাদের কর্মীকে খুনের পরিকল্পনা করেছে তৃণমূল সাংসদ,তাই তাদের নিরাপত্তা দিন।এরই সঙ্গে তিনি দাবি করেন সাংসদ যে খুনের পরিকল্পনা করেছে তার জন্য উনাকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করা হোক।তিনি এও বলেন এটা লজ্জার ব্যাপার,ভারতবর্ষে এই প্রথম কোন সাংসদ খোলাখুলি বলছেন মিডিয়ার কাছে তিনি মানুষকে খুন করবেন।যদিও শিল্পী হিসেবে নিজেকে ভেবে হিরন চট্টোপাধ্যায় বলেন আমি নিজে একজন শিল্পী,দেব একজন শিল্পী।কিন্তু এই ভেবে আমি লজ্জিত যে,একজন শিল্পী রাজনীতিতে চলে এলে তিনি মানুষকে খুনও করতে পারেন।সেই সঙ্গে হুমকি দিচ্ছেন যে ১০ থেকে ২০ দিনের মাথায় তিনি খুন করবেন বিজেপি কর্মীকে।এরপর হিরন চট্টোপাধ্যায় একটু ক্ষুব্ধ হয়ে পড়েন এবং ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন এর আগেও আমি অভিযোগ করেছি যে দেবের দুহাত রক্তমাখা রয়েছে।উদাহরণ হিসেবে বলেন এই পিংলায় শান্তনু ঘোড়ইকে কে দেব ই খুন করেছে।আমরা যদিও সেই বিজেপি কর্মী খুনে রাজনীতি করিনি,রাজনীতি করিনি ডেডবডি নিয়ে।আজকে পুরো পরিষ্কার হয়ে গেল যে এই বিজেপি কর্মী খুনে সমস্ত পরিকল্পনাটা উনারই ছিল।
এরপর তিনি বিগত দিনে ৩০% কাটমানি নেওয়া তৃণমূল প্রাক্তন বিধায়ক শঙ্কর দলুই এর ভাইরাল অডিওর উদাহরণ এবং সুদীপ মন্ডলের উদাহরণ টেনে এনে বলেন উনি কাটমানি নেন,কয়লা,বালি পাচার করেন এবং খুনের রাজনীতি করেন।তবে কেশপুরের মানুষকে আশ্বস্ত করে হিরন বলেন আপনারা নিশ্চিন্তে থাকুন,আপনার শান্তিতে থাকুন যে কেশপুরে কোনরকম অশান্তি হতে আমি দেব না।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য,গত মঙ্গলবার ভোটের প্রাক্কালে কেশপুরের তৃণমূল পদাধিকারীদের নিয়ে কেশপুর ব্লকের তিন নম্বর অঞ্চলে পাঁচখুরি ক্রিয়েটিভ টাওয়ারে এক বিশেষ সংগঠনের বৈঠকে আয়োজন করেন দীপক অধিকারী ওরফে তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ দেব।সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ঘাটাল সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি আশীষ হুদাইত,ঘাটালের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী দীপক অধিকারী,কেশপুরের বিধায়িকা শিউলি সাহা,কেশপুরের ব্লক সভাপতি প্রদ্যুৎ পাঁজা সহ ৭ টি বিধানসভার দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা ও ব্লকের সভাপতিরা।বৈঠক শেষে পুলিশের বিরুদ্ধে হিরনের হুমকি দেওয়া প্রসঙ্গে দেব বললেন আমার আশংকা হচ্ছে এইবার হয়তো হত্যার রাজনীতি করবে বিজেপি।পাশাপাশি তিনি বলেন বিজেপি প্রার্থী উঠে পড়ে লেগেছে কেশপুরে সন্ত্রাস করে ভোটে জিততে।আমি পুলিশ প্রশাসন কে বলবো সতর্ক থাকতে।কারণ ওরা নিজেদের কর্মীকে মেরে তৃণমূলের ঘাড়ে দোষ চাপাতে চাইছে।