
নিজস্ব প্রতিনিধি,ডেবরা:
অর্থ দিয়ে সাহায্য করতে গিয়ে শোকজ খেলেন তৃণমূল বিধায়ক।বোমার আঘাতে মৃত শিশুর পরিবারকে টাকা দিতে গিয়ে ডেবরার বিধায়ক হুমায়ুন কবীরকে শোকজ় করল তৃণমূল। তিনি নদিয়ার কালীগঞ্জে নিহত তামান্না খাতুনের বাড়িতে গিয়েছিলেন বুধবার। তাঁর মাকে টাকা দিতে চেয়েছিলেন।

এবার রাতারাতি পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরার বিধায়ক,প্রাক্তন আইপিএস হুমায়ুন কবীরকে শোকজ় করল তৃণমূল।সূত্র অনুযায়ী তিনি নদিয়ার কালীগঞ্জে নিহত নাবালিকা তামান্না খাতুনের বাড়িতে গিয়েছিলেন বুধবার। তার মাকে টাকা দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তামান্নার মা সাবিনা বিবি সেই অর্থ সাহায্য প্রত্যাখ্যান করেন। এরপরই হুমায়ুনের আচরণ নিয়ে বিস্তর বিতর্ক হয়েছে।তার পরেই তাঁর বিরুদ্ধে পদক্ষেপের সিদ্ধান্ত নেয় দল। রাজ্য তৃণমূলের সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার বৃহস্পতিবার হুমায়ুনকে শোকজ় করার কথা জানান। ৭২ ঘণ্টার মধ্যে তাঁকে এই চিঠির জবাব দিতে বলা হয়েছে।

যদিও এই বিষয়ে হুমায়ুন কবীর বলেন”‘আমি সংবাদমাধ্যমে দেখেছি।বেশ কয়েকজনের মুখ থেকেও শুনেছি।এখনও আমি কোনও চিঠি পাইনি। চিঠি পেলে জানাব।’’ তাঁর কালীগঞ্জ যাওয়ার বিষয়ে দল যে জানত না, সে কথাও জানিয়েছেন হুমায়ুন। তিনি বলেন, ‘‘আমার একটি বেসরকারি সংস্থা আছে। আমি সেই সংস্থার পক্ষ থেকে গিয়েছিলাম এই বিষয়ে দল জানত না।’’প্রসঙ্গত উল্লেখ্য,গত ১৯ জুন কালীগঞ্জে বিধানসভার উপনির্বাচন হয়।তার গণনা ছিল সোমবার,২৩ তারিখ। গণনা শেষের আগেই তৃণমূলের বিজয় উৎসব শুরু হয়েছিল। অভিযোগ, সেখান থেকে সিপিএম কর্মীদের বাড়ি লক্ষ্য করে বোমা ছোঁড়া হয়। সেই বোমার আঘাতে মৃত্যু হয় ১০ বছরের ছোট্ট তামান্নার। তাঁর মা জানিয়েছেন,তাঁরা সিপিএম করেন।সেই কারণে ভোটে জেতার পর প্রতিহিংসামূলক এই আক্রমণ করা হয়েছে।

কালীগঞ্জে জয়ের পরেও তামান্নার মৃত্যু অস্বস্তিতে রেখেছে রাজ্যের শাসক দলকে। এই পরিস্থিতিতে বুধবার তামান্নাদের বাড়িতে যান হুমায়ুন।সেই শোকার্ত পরিবারের সঙ্গে দীর্ঘ ক্ষণ কথা বলেন। তামান্নার মা নানা অভিযোগ এবং ক্ষোভ উগরে দেন তাঁর কাছে। যে বোমার আঘাতে বালিকার মৃত্যু হয়েছে,কেন এখনও সেই বোমা উদ্ধার করা গেল না, কেন এক বারও কালীগঞ্জের জয়ী তৃণমূল প্রার্থী তাঁর সঙ্গে দেখা করতে এলেন না— এ সব প্রশ্ন তোলেন সাবিনা। এর পরেই কমলা রঙের একটি খাম শোকার্ত মায়ের হাতে তুলে দিতে যান হুয়ামুন। জানান, খামে কিছু টাকা আছে।টাকার কথা শুনে ফুঁসে ওঠেন সাবিনা। ‘না, না, না’ বলে চিৎকার করে ওঠেন। জানান, তাঁদের বাড়ি আছে, জমি আছে। টাকার প্রয়োজন নেই। তিনি মেয়ের খুনের বিচার চান। টাকা নেওয়ার মতো কেউ নেই পরিবারে, জানান তামান্নার মা।