
নিজস্ব প্রতিনিধি,খড়গপুর:
এক মর্মান্তিক দৃশ্য রেল শহর খড়গপুরে।বিছানার উপর পড়ে স্ত্রীর মৃতদেহ।পাশে ঘুমিয়ে ৩ বছরের কন্যাসন্তান।অন্যদিকে বাড়ির লোহার সিঁড়ি থেকে ঝুলছে স্বামীর মৃতদেহ।এমনই ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার খড়্গপুর শহরের ১৫ নং ওয়ার্ডের জয় হিন্দনগর এলাকায়।ঘটনাস্থলে পৌঁছে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে খড়গপুর টাউন থানার পুলিশ।

এবার রেল কোয়ার্টার থেকে উদ্ধার যুগলের মৃতদেহ পাশে ঘুমিয়ে রয়েছে শিশু কন্যা।যা নিয়ে তীব্র চাঞ্চল্য খড়্গপুরে।পুলিশ সূত্রেই জানা গেছে, মৃত স্ত্রী-র নাম দীপা মাহাত (২৬) এবং স্বামীর নাম বিক্রম পুত্তা (৩৭) পেশায় গাড়ি চালক।পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, পারিবারিক অশান্তির কারণেই রবিবার রাতে স্ত্রী-কে খুন করে নিজেও আত্মঘাতী হয়েছেন স্বামী বিক্রম।এই মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালে পাঠিয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে,বছর পনেরো আগে শহরের ১৩নং ওয়ার্ডের নিমপুরা এলাকার বাসিন্দা,পি.সোনির সাথে বিয়ে হয় বিক্রমের।তাঁদের ১৪ বছরের একটি ছেলে এবং ১২ বছরের যমজ মেয়ে আছে। এরপর এই বিক্রম প্রথম স্ত্রীকে ছেড়ে বছর পাঁচেক আগে শহরেরই একটি এলাকার বাসিন্দা দীপা-কে বিয়ে করেন।তাঁদের তিন বছরের একটি মেয়ে আছে।

প্রথম প্রথম সবকিছু ঠিকঠাক থাকলেও ইদানিং দীপার সঙ্গে বিক্রমের প্রায়ই ঝগড়াঝাঁটি লেগে থাকতো বলে জানা যায়।আর তাতেই প্রথম পক্ষের স্ত্রী সোনির সাথে ফের ঘনিষ্ঠতা বাড়তে শুরু করে বিক্রমের।সোমবার সকালে সোনি দাবি করেছেন, রাতে তাঁর কাছেই খাওয়া-দাওয়া করে জয় হিন্দনগরের বাড়িতে আসতেন বিক্রম।রবিবার রাতে অবশ্য সোনির নিমপুরার বাড়িতে যাননি বিক্রম।আর সেজন্যই ভালোমন্দ খোঁজ নিতে সোমবার সকাল ১০টা নাগাদ জয় হিন্দনগরে পৌঁছন তিনি। তার কথামতো।ঘরের দরজা ভেতর থেকে ভেজানো ছিল।দরজা খুলে ভেতরের দৃশ্য দেখে ভীত হয়ে পড়ে সোনি।দরজা খোলার পর প্রথমেই দেখেন লোহার সিঁড়ি থেকে ঝুলছে বিক্রমের মৃতদেহ।তারপর ঘরের ভিতরে প্রবেশ করে দেখেন,বিছানায় পড়ে দীপার দেহ।পাশে পড়ে একটি লোহার রড। মৃতদেহের পাশে তখনও অঘোরে ঘুমোচ্ছে দীপা আর বিক্রমের তিন বছরের কন্যাসন্তান।

এই ঘটনার পরই সোনি আতঙ্কিত হয়ে পড়ে খড়গপুর টাউন থানায় ফোন করে খবর দেন। খবর পেয়ে দৌড়ে আসে খড়গপুর টাউন থানার পুলিশ। তারা এসে সব কিছু খতিয়ে দেখে ঘটনার তদন্ত শুরু করে।প্রাথমিক অনুমান,রবিবার রাতে বড়সড় কোন অশান্তির কারণেই স্ত্রী কে মেরে আত্মঘাতী হয়েছেন বিক্রম।এলাকায় কানাঘুঁষো খবর, ইদানিং দীপাও একটি বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে ছিলেন।আর তা নিয়েই স্বামী-স্ত্রী’র সম্পর্কে ফাটল ধরে।আর তা থেকেই অশান্তি এবং বিক্রমের এই চরম সিদ্ধান্ত।

যদিও এ বিষয়ে সাংবাদিকদের জেলা পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন,”তদন্ত শুরু করা হয়েছে।ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরই বিষয়টি সম্পর্কে নিশ্চিতভাবে কিছু বলা সম্ভব।”অন্যদিকে এই ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছিল সংশ্লিষ্ট এলাকায়। তবে মুখে কুলুপ সকলের।