
নিজস্ব প্রতিনিধি,মেদিনীপুর:
চিকিৎসা করাতে এসে হাতছাড়া হয়ে গিয়েছিলেন স্বামীর সঙ্গে।অবশেষে যোগাযোগ করে মেদিনীপুর তাকে ফিরিয়ে দিল নিজের বাড়ির লোকের কাছে, এমনই ঘটনা মেদিনীপুরে। যদিও এই উদ্যোগী ভূমিকা নিয়েছে হ্যাম রেডিওর সদস্য,মেদিনীপুরের সাংবাদিক পৌরসভা ও পুলিশ প্রশাসন।

চলতি বছর এপ্রিল মাসে মেদিনীপুর স্টেশনে বসে বসে কাঁদছিলেন এক ৭০ ঊর্ধ বৃদ্ধা। পুলিশ কর্মীরা তাকে উদ্ধার করে নিয়ে এসেছিল মেদিনীপুর সেন্ট্রাল বাস স্ট্যান্ডের ‘শেল্টার ফর আরবান হোমলেসে’। ভাষা সমস্যার কারণে প্রথমে কেউ বুঝতে পারছিল না বৃদ্ধার পরিজনেরা কোথায় বা তার বাড়ি কোথায়। ধীরে ধীরে আশ্রমের কর্মীরা বুঝতে পারেন বৃদ্ধার বাড়ি বিহারের ভাগলপুরে। তবে কোনভাবেই বৃদ্ধার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছিল না আশ্রম কর্তৃপক্ষর তরফে। অবশেষে মাস দুয়েক বাদে পূজা রানা নামে আশ্রমের এক কর্মী যোগাযোগ করে সাংবাদিকদের সাথে। শনিবার মেদিনীপুর শহরের সাংবাদিকরা বিশেষ করে শোভন দাস,অভিষেক চক্রবর্তী,দেবব্রত সরকার ও সুদীপ্ত দাস উদ্যোগী হয়ে যোগাযোগ করেন ওয়েস্ট বেঙ্গল রেডিও ক্লাবের সাথে। আর এরপরই মুশকিল আসান। মাত্র কুড়ি মিনিটেই রেডিও ক্লাবের তরফে খুঁজে বার করা হয় বৃদ্ধার গ্রামের ভিটে।

যোগাযোগ করা হয় পরিবারের সদস্যদের সাথে। প্রিয়জনের খবর পেয়ে শনিবার রাতেই বিহারের ভাগলপুর থেকে মেদিনীপুরের উদ্দেশ্যে রওনা দেয় বৃদ্ধের পরিবারের সদস্যরা। রবিবার সকালে আশ্রমে এসে পৌঁছন HAM রেডিওর দুই সদস্য সহ বৃদ্ধার স্বামী ও দুই নাতি। জানা গিয়েছে, এপ্রিল মাসে ভাগলপুর থেকে স্বামীর সাথে বর্ধমানের গুরাপে ডাক্তার দেখাতে এসেছিলেন ফুলবতি দেবী। ডাক্তার দেখিয়ে বাড়ি ফেরার সময় ভিড় ট্রেনে উঠতে গিয়ে স্বামীর হাতছাড়া হয়ে যায় ফুলবতীর। এরপর দিকভ্রষ্ট হয়ে এপ্রিল মাসের ১৭ তারিখ মেদিনীপুর চলে আসে সে। হাওড়া থেকে শুরু করে বেনারস হয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বৃদ্ধাকে খুঁজে বেড়ান পরিবারের সদস্যরা। তবে মেলেনি খোঁজ। অবশেষে মিলল সাফল্য।

সমস্ত অফিসিয়াল ফর্মালিটির পর বৃদ্ধাকে তুলে দেওয়া হয় পরিবারের সদস্যদের হাতে। ছিলেন মেদিনীপুর পৌরসভার পৌর প্রধান সৌমেন খান, মেদিনীপুর কোতোয়ালি থানার পুলিশ আধিকারিকরা। নতুন কাপড় পরিয়ে বৃদ্ধাকে সম্মান জানানো হয় পৌরসভার তরফে। সম্মান জানান সাংবাদিকরাও। এরপর প্রাণ ভরা খুশিতে একরাশ চোখে জল নিয়ে ভাগলপুরের উদ্দেশ্যে রওনা দিলেন বৃদ্ধা।