
নিজস্ব প্রতিনিধি,গোপীবল্লভপুর:
চেনা ছকের বাইরে বেরিয়ে পালিত হলো বিবাহ বার্ষিকীর অনুষ্ঠান।পরিবেশ সচেতনতার বার্তা দিয়ে এবং সমাজসেবা মূলক কর্মসূচি রূপায়ণের মধ্য দিয়ে নিজেদের বিবাহ বার্ষিকী পালন করলেন ঝাড়গ্রাম জেলার গোপীবল্লভপুর-১ নং ব্লকের দাস দম্পতি।

ঝাড়গ্রামের গোপীবল্লভপুরে আশুই গ্রামে সমাজকর্মী সনাতন দাস কে কে না চেনে। সনাতনবাবু কে এলাকায় পরোপকারী সমাজ কর্মী হিসেবে চেনেন সবাই।বিশেষ করে অসময়ে দুস্থ পরিবার গুলি যখন তার আর্থিক অনটন এবং টাকার অভাবে তাদের মেয়েকে বিয়ে দিতে পারে না তারা স্মরণ করেন এই সনাতন বাবুকে।আর তিনি এক ডাকে উপস্থিত হন।নিজে দাঁড়িয়ে বিয়ের সমস্ত দায়-দায়িত্ব খরচাপাতি সেইসঙ্গে যৌতুকের খাট আলমারি দিয়ে ভুরিভোজ করিয়ে বিয়ে দেন।গত কয়েক বছরে প্রায় দু হাজারের উপর জোড়া তিনি বিয়ে দিয়েছেন এই জেলা জুড়ে।এহেন সনাতন বাবুর এই দিন ছিল ২১ তম বিবাহ বার্ষিকী।তবে তিনি এই বিবাহ বার্ষিকীতে আর দশটা মানুষের মত হই হুল্লোড় আমোদ প্রমোদ না করে একধারে যেমন চারাগাছ রোপণ ও বিতরণ করলেন তেমনি আর্থিক দিক থেকে পিছিয়ে থাকা মানুষদের মধ্যে মশারী বিতরণ করলেন এই বিশেষ দিনে।

এই উদ্যোগের একমাত্র কারণ তীব্র দাবদাহ থেকে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করা।সেই সঙ্গে এলাকায় দুঃস্থ পরিবারে মশারি বিতরণ করলেন কেবলমাত্র মশা বাহিত রোগ ডেঙ্গু থেকে সচেতন করতে।এই আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকায় বিতরণ করা হয় মশারি।এই গোপীবল্লভপুর থানা এলাকার আদিবাসী অধ্যুষিত ধোবাডাহি গ্ৰামে ৮০ জন দুঃস্থ মানুষের হাতে তুলে দেওয়া হল মশারি। এই বিবাহ বার্ষিকী পালনের এই অভিনব উদ্যোগে অংশ নিলেন গোপীবল্লভ পুরের কবি,সাহিত্যিক থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ ও কচিকাঁচারা।সনাতন দাস ও তাঁর স্ত্রী এদিন ধোবাডাহি গ্রামে রাস্তার ধারে ও ফাঁকা জায়গায় শতাধিক মতো চারাগাছ রোপণ করার উদ্যোগ নেন।

এই বিষয়ে এদিন সনাতন বাবু ও তাঁর স্ত্রী কবিতা দাস বলেন,”বিবাহ বার্ষিকী আমরা এই ভাবেই পালন করে থাকি বিশেষ করে সমাজ সচেতনতার বার্তা দিয়ে।এরই পাশাপাশি এই দুস্থ আদিবাসী এলাকায় ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়েই চলছে।তাই ডেঙ্গু সচেতনতা বৃদ্ধি করতে মশারি বিতরণের পাশাপাশি পরিবেশ রক্ষার বার্তা নিয়ে বৃক্ষরোপন ও চারা গাছ বিতরণ করলাম।অন্যদিকে স্থানীয় বাসিন্দা অনুপ কর,অনিমেষ সিংহ,উৎপল তালধী,সুব্রত সিংহরা দাস দম্পতির এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন।পাশাপাশি এই দাবদাহের মাঝে যাতে সমস্ত গাছগুলোকে বাঁচিয়ে তোলা যায়,সে বিষয়ে নজর দেওয়ার জন্য গ্রামবাসীদের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন দাস দম্পতি।

উল্লেখ্য,প্রতিবছরই এই দম্পতি তাঁদের বিবাহ বার্ষিকীতে নতুন কিছু করার চেষ্টা করেন।এমনিতে সনাতন দাস বাবু বছরভর নানা সামাজিক কাজে যুক্ত থাকেন বলে জানান স্থানীয় মানুষজন।