
মেদিনীপুর 16 ই অক্টোবর:
মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজে রোগী এবং রোগীর গর্ভস্থ সন্তানের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভ দেখালো বিজেপি। বিজেপির অভিযোগ,এই হাসপাতালে দালাল রাজ চলে এল, তাছাড়া ডাক্তার নেই,ইনজেকশন নেই,ওষুধ নেই নার্স নেই। হাসপাতালে নিয়োগ নিয়েও চলে দুর্নীতি।এদিন তারা প্রিন্সিপাল কে না পেয়ে তার চেয়ারে মালা দিয়ে অভিনব বিক্ষোভ দেখালো,এর সঙ্গে উপহার দেওয়া হলো সময় মত আসার জন্য দেওয়াল ঘড়ি।

পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার মেদিনীপুর শহরেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বপ্নের সুপার স্পেশালিটি হসপিটাল হল মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতাল।এই হাসপাতালে বিশেষভাবে প্রসূতিদের চিকিৎসার জন্য তৈরি করা হয়েছে মাতৃমা।বেসরকারি সুপার স্পেশালিটির ধাঁচেই এই মাতৃমা তৈরি অথচ মাতৃমা হওয়ার পর থেকে একের পর এক ঘটনা ঘটে চলেছে মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।একদিকে যেমন প্রসূতি মৃত্যু ঘটছে সেই সঙ্গে মৃত্যু ঘটছে সদ্যজাত শিশুর।বছরের শুরুতেই প্রসূতি মৃত্যু নিয়ে উত্তাল হয়েছিল মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজও হাসপাতাল। একসঙ্গে প্রায় প্রায় পাঁচ প্রসূতির ডায়ালিসিস চলে এই হাসপাতালে কিন্তু তাতেও ট্রিটমেন্ট না হওয়ায় বাধ্য হয়ে কলকাতায় রেফার করতে হয়।সেই ঘটনায় প্রসূতির সঙ্গে শিশুর মৃত্যু ঘটেছে।তা নিয়ে মেডিকেল টিম,সিআইডি তদন্ত সহ স্বাস্থ্য দপ্তরের একাধিক টিম এসেছে এই হাসপাতালে।

যেই ঘটনায় সাসপেন্ড হয়েছিল ডাক্তাররা কিন্তু তারপরও টনক নড়েনি।গত মঙ্গলবার সকালে এক প্রসূতির মৃত্যু ঘটে সঙ্গে মৃত্যু ঘটে তার নয় মাসের শিশুর। এই ঘটনায় হাসপাতালের বেহাল অবস্থা ও দুরবস্থা নিয়ে সোচ্চার হয় রোগীর পরিবার।চটজলদি সেই ঘটনা তদন্ত করতে কলকাতা থেকে দৌড়ে আসে তিনজনের মেডিকেল টিম।যদিও সেই ঘটনার তদন্ত চলছে।এইদিন মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজের বিরুদ্ধে ভুরিভুরি অভিযোগ নিয়ে সোচ্চার হল বিজেপি।বিজেপির অভিযোগ এখানে নাকের ডগায় শিশু পাচার হয়ে যায়, প্রসূতির মৃত্যু ঘটে চিকিৎসা না পেয়ে।এরই সঙ্গে বাচ্চা ডেলিভারি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আয়াদের দৌরাত্ম লেগেই থাকে।এছাড়াও তাদের অভিযোগ সময় মতো প্রিন্সিপাল আসেন না,হাসপাতালে চলছে তৃণমূলী দালাল রাজ।

এই সকল অভিযোগ তুলে এদিন হাসপাতালের মাতৃমার সামনে এক প্রস্থ বিক্ষোভের পাশাপাশি মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল প্রিন্সিপালের কাছে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন তারা। হাতে প্ল্যাকার্ড ব্যানার নিয়েই তারা ঢুকে পড়েন প্রিন্সিপালের রুমে।সে সময় প্রিন্সিপাল না থাকায় প্রিন্সিপালের চেয়ারে মালা পরিয়ে তারা কটাক্ষ করেন সঙ্গে তারা একটা দেওয়াল ঘড়ি উপহার দেন। যাতে সেই ঘড়ি দেখে প্রিন্সিপাল সময় মত হাসপাতালে আসেন এবং সুব্যবস্থা দেন হাসপাতালে। এই বিজেপির বিক্ষোভ নেতৃত্ব দেন বিজেপির মন্ডল কর্তারা।সেই সঙ্গে বিজেপির সহ-সভাপতি সংকর গুছাইত, মুখপাত্র অরূপ দাস,শুভজিৎ রায় সহ বিশিষ্ট নেতৃবৃন্দ।

এ বিষয়ে বিজেপির জেলা সহ-সভাপতি সংকর গুছাইত বলেন,”মেদিনীপুর হাসপাতাল নামে সুপার স্পেশালিটি।এখানে ওষুধ নেই, ইনজেকশন নেই,ডাক্তার নেই নার্স নেই চলে দালাল রাজ।সম্প্রতি মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজে ঘটেছে স্যালাইন কান্ড।তারপরও তাদের টনক নড়েনি।গত একদিন আগে চিকিৎসার না পেয়ে মারা গেছে এক প্রসূতি ও তার নয় মাসের গর্ভের সন্তান। তাছাড়া এখানে অভিযোগ জানাতে গেলে রোগীর পরিবারকে হয়রানি ও মারধর খেতে হয়।তাই আমরা প্রিন্সিপালের কাছে আবেদন করছি দয়া করে রোগীদের জীবন নিয়ে ছেলে খেলা করবেন না।

তারই পাশাপাশি তিনি আমাদের আসার খবর জেনেই পালিয়ে গেছেন। তাই তাকে ফুলের মালা এবং সময় মতো আসার জন্য ঘড়ি উপহার দিয়ে গেলাম।