
মেদিনীপুর 13 ই অক্টোবর:
ফের মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা অবহেলায় প্রসূতি মৃত্যুর অভিযোগ। শুধু প্রসূতি নয় সেই সঙ্গে তার গর্ভে থাকা নয় মাসের সন্তানেরও মৃত্যু হয়েছে।এই ঘটনায় প্রাতিষ্ঠানিক হত্যার অভিযোগ রোগীর পরিবারের।সেইসঙ্গে মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজের অব্যবস্থায় ক্ষোভ উগরে দিলেন রোগীর পরিবার।

ঘটনা ক্রমে জানা যায়,রবিবার সন্ধ্যায় শারীরিক সমস্যা নিয়ে মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় বেলদার নাহাপার এর বাসিন্দা শিখা দাস কে। পরিবারের অভিযোগ, ৯ মাসের প্রেগন্যান্ট মহিলা কে শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা নিয়ে দেখালেও তা গুরুত্ব দেয়নি হাসপাতালের চিকিৎসকেরা।প্রাথমিকভাবে কিছু পরীক্ষা করার পরেই তাকে হাসপাতাল থেকে ছুটি দেওয়া হয় রাতেই। এও অভিযোগ পরিবার বারবার প্রসুতিকে হাসপাতালে ভর্তি রাখার আবেদন জানালেও সেই আবেদনে সাড়া দেওয়া হয়নি।এরপর গভীর রাতে ফের শারীরিক সমস্যা দেখা দেয় ওই গর্ভবতী মহিলার। তড়িঘড়ি সেই পরিবার হাসপাতালে নিয়ে আসে ওই মহিলাকে।তাকে ভর্তি করা হয় মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে।কিন্তু সোমবার সকালেই মৃত্যু হয় ওই গর্ভবতী মহিলার।

পরিবারের অভিযোগ চিকিৎসার গাফিলতির কারণেই প্রসবের আগেই মৃত্যু হল ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা মহিলার।এই ঘটনায় ক্ষোভে ফেটে পড়েন প্রসূতির পরিবারের সদস্যরা। এরপর তারা আইসিইউ এর সামনে অবস্থান বসে পড়েন।এই ঘটনায় ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় কোতওয়ালী পুলিশ।যদিও এই ঘটনায় তড়িঘড়ি তিন সদস্যের একটি মেডিকেল টিম পাঠানো হয় মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।এরপর মৃতার পরিবার থেকে লিখিত অভিযোগ জানানো হয়।অন্যদিকে এদিন বিকেল সন্ধ্যে নাগাদ মেডিকেল টিম পৌঁছে যায় মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।তারা মেডিকেল কলেজ প্রিন্সিপাল মৌসুমী নন্দী,কলেজ সুপার ইন্দ্রনীল সেন, মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সৌম্য সংকর সড়ঙ্গী সহ ডিপার্টমেন্টের সকল ডাক্তারদের নিয়ে এক বৈঠকে বসেন।

দু ঘণ্টার ওপরে চলা বৈঠকে শেষ করে কলকাতার উদ্দেশ্যে পাড়ি দেন টিমের সদস্যরা।যাওয়ার আগে বলে যান তদন্ত শেষ না হলে কিছুই বলা যাবে না।কলকাতার এই মেডিকেল টিমে ছিলেন ADHS (Child Health) Dr. ভবানী দাস, Prof. রামপ্রসাদ দে,(Professor, G&O, Medical College,Kolkata) ও গীতা ভৌমিক।

এই বিষয়ে মৃতের স্বামী পবিত্র দাস বলেন,”আমার স্ত্রী নয় মাসের প্রসূতি ছিলেন। তার শ্বাসকষ্ট জনিত কারণে আমরা ভর্তি করতে এসেছিলাম কিন্তু এখানকার ডাক্তার রা বিভিন্ন রকম টেস্ট করে তাকে হঠাৎই ছুটি দিয়ে দেয়।আমরা বারবার অনুরোধ করি যে ভর্তি নেওয়ার জন্য কিন্তু তিনি তারা শোনেননি।এরপর গভীর রাত্রে ফের সমস্যা হয় এবং তারপর নিয়ে আসি আমরা।তখন তারা আমাদেরকে একবার মেডিসিন একবার মাতৃমা ঘুরাতে থাকে এই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।যদিও শেষ পর্যন্ত আমার স্ত্রী এবং আমার স্ত্রীর গর্ভের সন্তান মারা যায়।আমরা মনে করছি এটা প্রাতিষ্ঠানিক হত্যা। তাই এর বিচার চাই।

যদিও এ বিষয়ে মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সুপার ইন্দ্রনীল সেন বলেন,”আমরা গোটা ঘটনা খতিয়ে দেখছি।সেইসঙ্গে কলকাতা থেকে মেডিকেল টিম এসেছে তারা আলোচনা করছে এবং খতিয়ে দেখছে।তবে সিনিয়র ডাক্তার ছিল কিনা তা বলতে পারবো না।তবে মনে হয় অবশ্যই ছিল।তবে কি কারণে এই প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে যতক্ষণ না তদন্ত শেষ হয় ততক্ষণ বলা সম্ভব নয়।তবে কোন মৃত্যুই কাম্য নয়।