নিজস্ব প্রতিনিধি,ঘাটাল
গত কয়েকদিন ধরে অবিরাম বৃষ্টি এবং তার জেরেই বিভিন্ন বাঁধ থেকে জল ছাড়াই বন্যার দেখা দিয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরের বর্ডার এলাকার ঘাটাল,দাসপুরে। বিভিন্ন নদীর ওপর দিয়ে যাওয়া কাঁচা বাঁশের সেতু যেমন ভেঙে হয়েছে তেমনি জল ঢুকতে শুরু করেছে ইতিমধ্যেই পৌরসভা এলাকাগুলোতেও।জল বৃদ্ধি পেয়েছে শিলাবতী ,ঝুমি, রূপনারায়ন এবং কাঁসাই সহ বিভিন্ন নদীতে।ঘাটালের বাঁকা,গাদিঘাট,বন্দর,রানিচক,গোপিগঞ্জ, কলমিজোড় পয়েন্টগুলিতে নদীর জলস্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে।কয়েকটি ক্ষেত্রে পিডিএল অর্থাৎ প্রাইমারি ডেঞ্জার লেভেল অতিক্রম করেছে জলের স্তর।বোট ,ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট ফোর্স, ত্রাণ সহ সব দিক থেকে প্রশাসন প্রস্তুত।ঘাটাল পৌরসভার নিচু এলাকার ওয়ার্ডগুলিতে জল প্রবেশের পাশাপাশি জলস্তর বেড়ে যাওয়ায় উঁচু করা হয়েছে ভাসাপোল কে ইতিমধ্যে পাঞ্চেত,গালুডি, মাইথনসহ একাধিক বাঁধের জল ছেড়েছে কর্তৃপক্ষ। আজকেও দফায় দফায় সারাদিনই বৃষ্টি হয়েছে এলাকা জুড়ে।গতকাল রাতে একটি তিন তলার মাটির বাড়ি ভেঙে গেছে চন্দ্রকোনাতে। প্রান্তর এলাকা সহ খোদ শহর জলে জলমগ্ন। বিভিন্ন ওয়ার্ডে জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। যদিও এই পরিস্থিতি দফায় দফায় খতিয়ে দেখে প্রশাসনে আধিকারিকরা।এদিন ঘাটালের পরিস্থিতি দেখতে গেলেন জেলাশাসক খুরশিদ আলী কাদরী ও পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার সহ প্রশাসনের আধিকারিক বৃন্দ।তারা গোটা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ঘুরে দেখেন এবং সমস্ত কিছুই নিয়ে প্রশাসন প্রস্তুত রয়েছে বলেই তিনি মন্তব্য করেন। প্রশাসন সূত্র অনুযায়ী প্রায় ১৭টি ত্রান সেন্টার ইতিমধ্যে খোলা হয়েছে ঘাটালে। আরো কিছু কিছু জায়গা ঠিক করা হয়েছে যেখানে এই ত্রাণ শিবির খোলা হবে। এছাড়াও শুকনো খাবার যেমন মজুদ রয়েছে,তেমনি মাথার ছাউনির জন্য এক লক্ষ ত্রিপল মজুদ রেখেছে প্রশাসন। অন্যদিকে সাপে কামড়ানোর ওষুধ এন্টিভেনাম প্রচুর পরিমাণে মজুত রাখা হয়েছে। প্রচুর পরিমাণে মানুষকে যেমন সরানো হয়েছে তারই সঙ্গে দুটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে একটি প্রশাসন থেকে একটি পুলিশ থেকে। এবং সর্বক্ষেত্রে প্রশাসন প্রস্তুত বলে দাবি জেলা শাসকের।
এদিন জেলা শাসক খুরশিদ আলী কাদরী বলেন প্রাকৃতিক বিপর্যয় আটকানো যায় না।তবে প্রাকৃতিক বিপর্যয় থেকে মানুষকে বাঁচাতে অবশ্যই বদ্ধপরিকর প্রশাসন। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মতোই আমরা সমস্ত কিছু ব্যবস্থা রেখেছি।খোলা হয়েছে ত্রান শিবির আরো কিছু ত্রাণ শিবির খোলার জন্য আমরা নির্দিষ্ট জায়গা বেছে নিয়েছি। এরই সঙ্গে NDRF সহ ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট টিম আমাদের প্রস্তুত রয়েছে, রয়েছে ২০০ বোট। পাশাপাশি মানুষ যাতে এই সময় সাপের কামড়ে মারা না যায় তার জন্য আমরা অ্যান্টি ভেনাম মজুদ রেখেছি। আমরা দুটি কন্ট্রোল রুমও খুলেছি।আমরা ঘাটালের মানুষকে বলব এই সময় যদি বিপর্যয় দেখেন তাহলে বাড়িঘর ছেড়ে ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিন। প্রশাসন পুরোপুরি সহযোগিতা করবে আপনাদের।