নিজস্ব প্রতিনিধি,কার্মাটাঁড়:
সম্প্রতি বিদ্যাসাগরের স্মৃতি বিজড়িত কার্মাটাঁড়ে গিয়ে কার্মাটাঁড় বিদ্যাসাগর স্মৃতি রক্ষা কমিটির উন্নয়নমূলক কাজের জন্যে টাকা প্রদান।এইদিন মেদিনীপুর সমন্বয় সংস্থার পক্ষ থেকে বিদ্যাসাগরের আবক্ষ মূর্তির সম্মুখে সংস্থার যুগ্ম রাজকুমার মাইতি,অমিত কুমার সাহু ও অধ্যাপক শ্যামাপদ জানা স্মৃতি রক্ষা কমিটির কোষাধক্ষ্য সচিদানন্দ সিনহার হাতে এক লক্ষ দশ হাজার এক শত এক টাকার চেক তুলে দেন।
এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে সংস্থার কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক অমিত সাহু জানান দয়ার সাগর বিদ্যাসাগর শেষ জীবনের প্রায় ১৮ বছর কাটিয়েছেন এই কার্মাটাঁড়রের নন্দনকাননে।লোকচক্ষুর আড়ালে সমাজের পিছিয়ে পড়া এই আদিবাসী এলাকাটিকে বেছে নিয়েছিলেন নিজের কর্মভূমি রূপে।তাঁর সারাজীবনের কষ্টার্জিত উপার্জন থেকে ৩ একর ১৯ ডেসমিল জায়গা কিনে এখানকার জনজাতি অধ্যুষিত মানুষের মৌলিক চাহিদা খাদ্য,বস্ত্র ও মাথাগোঁজার ঠাঁইয়ের পাশাপাশি শিক্ষার প্রসারের জন্যে অবৈতনিক বিদ্যালয়,নিঃশুল্ক চিকিৎসা ও স্বনির্ভরতার জন্যে বহুবিধ প্রকল্প গড়ে তুলে ছিলেন বিদ্যাসাগর মহাশয়। কিন্তু খুবই দুঃখের ও পরিতাপের বিষয় তার মৃত্যুর পরে সমস্ত কিছু স্তব্ধ হয়ে যায়,এমনকি জায়গাটিও বিক্রি হয়ে যায়।১৯৭৪ সালে বিহারী বাঙালি এসোসিয়েশনের প্রচেষ্টায় জায়গাটি পুনঃরুদ্ধার হয়।
বর্তমানে নন্দনকানন স্মৃতি রক্ষা কমিটির ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় কার্মাটাঁড় স্টেশনের নাম পরিবর্তন হয়ে বিদ্যাসাগর স্টেশন নামকরণ হয়েছে।তবে বেশ কিছু উন্নয়ন ঘটলেও বিদ্যালয়টির অস্থিত্ব নেই।বর্ণপরিচয়ের স্রষ্টার এই পবিত্র স্থানে যাতে বাংলা,হিন্দি ও ইংরেজি ত্রিভাষা মিশ্রিত পেশা ভিত্তিক কোনো বিদ্যালয় গড়ে তোলা যায় তার উদ্যোগ নেওয়ার জন্যে উভয় সরকারের কাছে আবেদন জানান।প্রয়োজনে ডেপুটেশনে বাংলা থেকে ইচ্ছুক শিক্ষকদের নিয়োগ করে স্কুলটি চালু করার জন্যে প্রশাসনের দৃষ্টি গোচর করার জন্যে বঙ্গবাসী ও মেদিনীপুর বাসীকে শামিল হওয়ার অনুরোধ জানান।
স্মৃতি রক্ষা কমিটির পক্ষ থেকে আবেগ ঘন কণ্ঠে কোষাধ্যক্ষ সচিদানন্দ সিনহা জানান ২০১৯ সালে বিদ্যাসাগরের জন্মদিন ১২ আশ্বিন এখানে এসে যখন অমিতবাবু আমার হাত ধরে তাঁর লেখা কুইজে বিদ্যাসাগর বইটি আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রকাশ করেন তখন থেকে উনাদের কাছে সহায়তার বার্তায় দিয়ে ছিলাম।পরবর্তী পর্যায়ে সমন্বয় সংস্থার কেন্দ্রীয় কমিটির একটি ৪২ জনের টিমও ভ্ৰমণ করেন।এইদিন কৃতজ্ঞাতার আবদ্ধে উভয় সংস্থা যুক্ত হলাম।পাশাপাশি মেদিনীপুর সমন্বয় সংস্থার ন্যায় সহৃদয় ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের মহতী দানে বিদ্যাসাগরের স্বপ্ন সার্থক হোক এই কামনা করেন।
এই বিষয়ে রাজকুমার মাইতি বলেন ২০১১ সালে ২০ আগস্ট কলকাতার মহাবোধি সোসাইটি হলে এক সেমিনারের মাধ্যমে প্রাণ প্রতিষ্ঠিত হয় অবিভক্ত মেদিনীপুরের ঐতিহ্যবাহী সংগঠন হলো মেদিনীপুর সমন্বয় সংস্থা।অধ্যাপক শ্যামাপদ জানা জানান জনপ্রিয় গণিত বইয়ের লেখক অধ্যাপক প্রণবেশ জানার সুযোগ্য নেতৃত্বে অখণ্ড মেদিনীপুরের কৃতী সন্তানদের সহযোগিতায় স্বাধীনতার ৭২ বছর পরে ২০১৮ সালে ৭ বি,বলরাম ঘোষ স্ট্রিট ,কলকাতা – ৪ ঠিকানায় গড়ে ওঠে দীর্ঘ প্রতীক্ষিত মেদিনীপুর ভবন।মেদিনীপুরের গর্ব বিদ্যাসাগর,ক্ষুদিরাম , মাতঙ্গিনী ও বীরেন্দ্রনাথ শাসমলের স্মৃতিতে এই ভবনে রয়েছে বিদ্যাসাগর অতিথি নিবাস, ক্ষুদিরাম ছাত্র নিবাস, মাতঙ্গিনী গ্রন্থাগার ও দেশপ্রাণ সভাগৃহ গড়ে উঠে।
আগামী দিনে সল্টলেকে দ্বিতীয় কমপ্লেক্সও গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে।তাই দলমত নির্বিশেষে মেদিনীপুর বাসীর সহযোগিতা কামনা করেন l