
নিজস্ব প্রতিনিধি,মেদিনীপুর:
হইহুল্লোড় নয়,বৃদ্ধাশ্রমে কেক কেটে,ট্রাই সাইকেল বিতরণ করে জন্মদিন পালন মাইতি পরিবারের কিশোরীর। এ বছর ১৬ তম জন্মদিনে বৃদ্ধাশ্রমে বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের এক প্রস্ত খাইয়ে,শীতের পোশাক দিয়ে সেই সঙ্গে ভালো থাকার গ্রিটিংস কার্ড এর অভিনন্দন এর মাধ্যমে জন্মদিন পালন।মেয়ের আনন্দে খুশি মাইতি পরিবার।

বর্তমানে মোবাইল ও এন্ড্রয়েডের দাপটে হারিয়েছে গ্রিটিংস কার্ড ও চিঠি দেওয়ার প্রচলন।তাই এখন মোবাইলেই হ্যাপি নিউ ইয়ার বা হ্যাপি বার্থডে মেসেজ পাঠিয়ে দায়িত্ব এড়িয়েছে বর্তমান প্রজন্ম।কিন্তু এবার সেই গ্রিটিংস কার্ডের স্মৃতিকে তুলে আনতে সেই সঙ্গে নিজের জন্মদিন একটু অন্যরকম ভাবে পালন করল মেদিনীপুর শহর ও জেলার নির্দল প্রার্থী অনয় মাইতির বছর ১৬ এর কিশোরী সূচি।এদিন আর দশটা পরিবারের মতো বন্ধুবান্ধব নিয়ে পার্ক বা রেস্টুরেন্টে হৈ-হুল্লোড়ে না পুরোপুরি বাবার পথে হেঁটে বৃদ্ধাশ্রমে হাজির হয়েছিল এই মাইতি পরিবারের কিশোরী।সেখানে পরিবার সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া বৃদ্ধ বৃদ্ধাদের নিয়ে কেক কেটে জন্মদিন পালন করলো।

পাশাপাশি ভালো থাকার জন্য গ্রিটিংস কার্ড দিয়ে”Happy New year”ভালো থাকুন”আজকের দিনে ঈশ্বরের কাছে এই প্রার্থনা জানাই।এরপর তাদের শীতের পোশাক গায়ে চড়িয়ে পাত পেড়ে খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।তাতে আপ্লুত এই সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন অসহায় বৃদ্ধ বৃদ্ধারা।তারাও দুহাত ভরে আশীর্বাদ জানান এই মাইতি পরিবারের কিশোরীকে।পাশাপাশি এদিন মেদিনীপুর থেকে প্রায় ৬০ কিলোমিটার দূরে সবং-এর একটি প্রত্যন্ত এলাকায় অসহায় এক পরিবারকে ট্রাই সাইকেল বিয়ে পাশে থাকার বার্তা দেন।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য,একসময় মেদিনীপুর পৌরসভায় দীর্ঘদিন নির্দল প্রার্থী হিসেবে লড়াই করেছিলেন মেদিনীপুরের এই অনয় মাইতি।গত ২০২২ এর পৌরসভা নির্বাচনেও তিনি শাসক দলের সঙ্গে জোর টক্কর দিয়ে শেষ পর্যন্ত ৩৫৭ ভোটে পরাজিত হন।যদিও সেই সময় পুলিশ প্রশাসনের বিরুদ্ধেও অভিযোগ তোলেন তিনি।কিন্তু পরাজিত হয়েও তার মন ভাঙ্গেন নেই।বরং এক ও একাধিক সময় তিনি বিভিন্ন অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়িয়েছেন।কখনো চলতে না পারা মানুষদের ট্রাই সাইকেল তো কখনো হুইল চেয়ার।

আবার কখনো কখনো শীতের পোশাকের সঙ্গে মহামারী কোভিডের সময় মাস্ক স্যানেটাইজার নিয়ে হাজির হয়েছেন রাস্তায় রাস্তায়। যখন করোনা আক্রান্ত রোগীকে কেউ হাত দিতো না সেই সময় নিজে পিপিই কিট পরে করোনা আক্রান্ত রোগীকে ভর্তি করেছেন হাসপাতালে।তবে তিনি এখানেই থেমে থাকেননি এবং সমাজ সেবার বার্তা দিতেই তিনি মেয়েকে নিয়ে হাজির হয়েছিলেন এই বৃদ্ধাশ্রমে।এইদিন তার সঙ্গে এই অনুষ্ঠানে যোগ দেন ওয়ার্ড কাউন্সিলর সৌরভ বসু,সমাজ সেবী ইমদাদুল ইসলাম,সুরজিৎ সরকার সহ মাইতি পরিবারের অনয় মাইতি, স্মৃতিকনা মাইতি ও ছেলে শিবম মাইতি।

এদিন সূচি মাইতি বলেন বর্তমানে অ্যান্ড্রয়েড মোবাইলের যুগে হারিয়েছে গ্রিটিংস কার্ড।এখন মানুষ মানুষকে অভিবাদন জানাতে দ্বারস্থ হয়েছে মোবাইলে।তাই সেই গ্রিটিংস কার্ড এর মতন নস্টালজিয়া কার্ডকে তুলে আনতে আমি এই সমাজ থেকে সরে থাকা মানুষদের গ্রিটিংস কার্ড দিয়ে অভিনন্দন জানিয়েছি।চেয়েছি নিজের জন্মদিন কে এভাবেই অসহায় মানুষের সঙ্গে পালন করতে।

যদিও এ নিয়ে নির্দল প্রার্থী তথা সুচির বাবা অনয় মাইতি বলেন আমার পরিবারের বার্তায় হল অসহায় দুঃস্থ মানুষের পাশে থাকা।যতদিন বেঁচে থাকবো এই মানুষদের পাশে থেকে কাজ করে যাব।এর আগে নিজের স্ত্রীর জন্মদিনে কেক কেটেছি এরকম অসহায় মানুষের সঙ্গে থেকে।নিজের ছেলের ক্ষেত্রেও তাই এবং মেয়ের ক্ষেত্রেও আমরা এই ভাবেই জন্মদিন পালন করলাম।