Urus Festival:সম্প্রীতির বার্তা নিয়ে 1903 সাল থেকে “উরুস” যোগ দিতে বিশেষ বাংলাদেশী ট্রেন

Share

নিজস্ব প্রতিনিধি,মেদিনীপুর:

দুই বাংলার মিলনস্থল মেদিনীপুর শহর।শুক্রবার ভোরে বাংলাদেশ থেকে মেদিনীপুরে এসে পৌঁছায় বাংলাদেশ থেকে স্পেশাল ট্রেন।শিশু সহ প্রায় ২২৫৬ জন যাত্রীকে নিয়ে বুধবার বাংলাদেশের রাজবাড়ী থেকে স্পেশাল ট্রেন ছেড়েছিল।আজ সকাল নাগাদ মেদিনীপুরে আসে ট্রেনটি।এরপর স্পেশাল ট্রেনটি আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি ছেড়ে যাবে বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য মেদিনীপুর শহরে মির্জাবাজার এলাকায় রয়েছে জোড়া মসজিদ এবং রয়েছে খানকাহ শরীফ। যাকে ঘিরে মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষেরা বিশেষ উৎসবে মেতে উঠে প্রতিবছর।মক্কা মদিনার পর তাদের দ্বিতীয় তীর্থক্ষেত্র হল এই বাংলার এবং পশ্চিম মেদিনীপুরের এই জোড়া মসজিদ।এই উরুষ উৎসব ঘিরে এবারও সেজে উঠছে মেদিনীপুর শহরের জোড়া মসজিদ। ‘মওলা পাক’ হজরত সৈয়দ শাহ মুর্শেদ আলি আল কাদেরির প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে উরস পালিত হচ্ছে।হজরত মহম্মদের ৩২তম ও সুফি সাধনার আদিগুরু ‘বড় পীর সাহেব’ হজরত আব্দুল কাদের জিলানির ১৯তম বংশধর মওলা পাক ৪ ফাল্গুন প্রয়াত হন।ওই দিনটিতে দেশ-বিদেশের মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ তাঁদের গুরুকে স্মরণ করেন। ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বাংলাদেশ থেকে বিশেষ ট্রেনে ধর্মপ্রাণ মানুষেরা মেদিনীপুরে আসেন। মূলত তীর্থযাত্রীদের আনতে ১৯০৩ সাল থেকে এই বিশেষ ট্রেন পরিষেবা চালু হয়েছে।

তবে করোনা পরিস্থিতির কারণে দুবছর বাংলাদেশ থেকে ট্রেন আসেনি মেদিনীপুরে।যে সব গরিব ধর্মপ্রাণ মানুষ টাকা খরচ করে অনুষ্ঠানে আসতে পারেন না, তাঁদের জন্যই এই বিশেষ ট্রেনের আয়োজন।উরস ঘিরে প্রতিবারই উৎসবে মাতে মেদিনীপুর।শুধু মুসলিম সম্প্রদায় নয়, সব ধর্মের মানুষই বিশেষ এই দিনে জোড়া মসজিদে হাজির হন।এই উপলক্ষে সাত দিন ধরে চলে মেলা।বাংলাদেশ থেকে আসা তীর্থযাত্রীরা ফেরার সময় নানা সামগ্রী কিনে নিয়ে যান।অ্যালুমিনিয়ামের বাসনপত্র, মাদুর, মিষ্টি, জিরা সবই বিক্রি হয়। ক্ষীরের গজা, মিহিদানা হাঁড়ি ভর্তি করে নিয়ে যান বাংলাদেশিরা। উরসের সময়টাও ভাল ব্যবসা করে হোটেলগুলিও।এই দু’-একদিন হোটেল ভাড়াও বাড়ে।সব মিলিয়ে একদিনের উৎসবেও চাঙ্গা হয় শহরের অর্থনীতি। মেদিনীপুর পুরসভার পুরপ্রধান সৌমেন খান বাংলাদেশের পুণ্যার্থীর অভ্যর্থনা জানান ফুল দিয়ে। তীর্থযাত্রীদের জন্য জল ও টিফিনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। যাতে তীর্থযাত্রীরা গন্তব্যস্থলে পৌঁছতে অসুবিধে না হয় সেজন্য যোগাযোগ ব্যবস্থার জন্য বিভিন্ন সংগঠন গুলির তরফে একাধিক ব্যবস্থা করা হয়।রাজ্যের তরফে মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস আসার কথা রয়েছে।

এই বিষয়ে বাংলাদেশের টিম লিডার মহম্মদ মেহেবুবুর আলম দুলাল বলেন ভারত ও বাংলাদেশের সম্প্রীতি চিরদিনই রয়েছে। যার জন্য এই উরুস অনুষ্ঠানে আমরা প্রতি বছরই ছুটে আসি।আমরা প্রায় ১২ লক্ষ ভক্ত রয়েছি আমাদের পীর সাহেবের।সবাইতো আসতে পারে না,তাই বেছে বেছে এই ২২৫৬ জন আমরা এসেছি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে।প্রতিবছরও যে সুবিধে পায় এ বছরও অদ্ভুতপূর্ব সাহায্য করেছে ভারতীয় রেল এবং ভারতের মানুষজন।

মেদিনীপুর টাউন মুসলিম কমিটির প্রাক্তন সম্পাদক তথা মেলা কমিটির সদস্য আব্দুল ওয়াহেদ বলেন,এবারেও বাংলাদেশের ট্রেনে করে তীর্থযাত্রীরা এসেছেন।তাছাড়া অনেক তীর্থযাত্রী বিমানে বা গাড়িতে করে এসে গিয়েছেন।যাতে কোন রকম কোন সমস্যা না হয় সেদিকে নজরদারি থাকে সকলের।


Share

dnews.in