
নিজস্ব প্রতিনিধি,মেদিনীপুর:
চার দিনের মাথায় এবার কর্মবিরতি তুলে নিল অবস্থানে অনড় জুনিয়র ডাক্তাররা। তাদের দাবি মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দেওয়া হয়েছিল মানবিক মুখ্যমন্ত্রী তাদের কথা ভেবেছেন এবং একটা আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন যার জন্যই এই কর্মবিরতি আমরা তুলে নিলাম, বুধবার থেকে আমরা কাজে যোগ দেব।

গত ৯ জানুয়ারী মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজের মাতৃমাতে সন্তান জন্ম দেওয়া পাঁচ প্রসূতি অসুস্থ হয়ে পড়ে।যেই ঘটনায় রাজ্য রাজনীতিতে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। অভিযোগ তোলা হয় স্যালাইনের বিষক্রিয়া ও চিকিৎসার গাফিলতি।তড়িঘড়ি স্বাস্থ্য টিম এবং সিআইডি তদন্ত। এরপরেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চটজলদি সাত জন পিজিটি ডাক্তার,মেডিকেল কলেজের সুপার মোট তেরো জনের সাসপেনশন ও থানায় অভিযোগ দায়ের করতে বলেন।যে ঘটনার প্রেক্ষিতে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয় যাতে ক্ষুব্ধ হন মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজে কাজ করা জুনিয়র ডাক্তাররা।তারা বিভিন্নভাবে আবেদন নিবেদন করার পর অবশেষে তারা কর্মবিরতিতে সামিল হন।এই কর্মবিরতির মধ্যেই তারা বিভিন্ন দপ্তরের চিঠি পাঠান যেই চিঠির প্রেক্ষিতে বহু কমিশন খতিয়ে দেখতে আসেন তাদের আন্দোলন।

এরই মধ্যে তারা চিঠি পাঠিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কে।কিন্তু কর্মবিরতিতেও তারা অনড় থাকেন।এই পরিস্থিতির মধ্যে চার দিনের মাথায় কর্মবিরতি প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিল এই অবস্থানে বসে থাকার জুনিয়র ডাক্তাররা।তাদের বক্তব্য মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দেওয়ার পর মানবিক মুখ্যমন্ত্রী কাছ থেকে আশ্বাস পাওয়া গিয়েছে।যাতে মনে হয়েছে তাদের সাসপেনশন প্রত্যাহার হতে চলেছে।তাই আমরা মানুষের কথা ভেবে এবং মানবিক মুখ্যমন্ত্রীর কথা ভেবে এই কর্মবিরতি তুলে নিলাম।পাশাপাশি তাদের বক্তব্য এতদিন কাজ করতে না পেরে আমরা মানসিকভাবে বিধ্বস্ত,নিজেদের মধ্যেও হতাশার সৃষ্টি হচ্ছিল।তাই আমরা কাল থেকে কাজে যোগ দেব। এদিন দেখা যায় তাদের মাদুর, কম্বল,চাদর, বালিশ গোছানোর ছবি।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য,মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজে পাঁচ অসুস্থ প্রসূতির মধ্যে মামনি রুইদাস নামে এক প্রসূতি মৃত্যুতেই এই গন্ডগোলের সূত্রপাত তৈরি হয়।অভিযোগ ওঠে চিকিৎসার গাফিলতি ও স্যালাইনের বিষক্রিয়া।সেই ঘটনায় ৭ জন পিজিটি সহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সুপার নিয়ে মোট ১২ জন ডাক্তারের নামে অভিযোগ জমা পড়ে, সঙ্গে সাসপেনশন অর্ডার।যদি এই দিন শ্বেতা সিং নামে আরেক পিজিটির নাম অন্তর্ভুক্ত হয় এই FIR এ। যে ঘটনার তদন্তভার চালাচ্ছে সিআইডি।এই তালিকায় রয়েছেন বিভাগীয় প্রধান মহম্মদ আলাউদ্দিন,হাসপাতাল সুপার জয়ন্ত রাউত।

মাতৃমা বিভাগে ইউনিট ১ সি-র বেড ইনচার্জ দিলীপ পাল,সিনিয়র চিকিৎসক হিমাদ্রি নায়েক, আরএমও সৌমেন দাস,অ্যানাস্থেশিস্ট পল্লবী বন্দ্যোপাধ্যায়, পিজিটি প্রথম বর্ষের চিকিৎসক মৌমিতা মণ্ডল,পূজা সাহা, ইন্টার্ন চিকিৎসক সুশান্ত মণ্ডল,পিজিটি তৃতীয় বর্ষের চিকিৎসক জাগৃতি ঘোষ,ভাগ্যশ্রী কুন্ডু, পিজিটি প্রথম বর্ষের অ্যানাস্থেশিস্ট মণীশ কুমার ও শ্বেতা সিং(PGT)।

গত শনিবার রাত থেকে তোষক মাদুর পেতে রীতিমতো কর্মবিরতি চালিয়ে যাচ্ছিলেন এই ডিপার্টমেন্টের জুনিয়র ডাক্তাররা।