নিজস্ব প্রতিনিধি,মেদিনীপুর:
সরস্বতী পুজো রবিবার না সোমবার তা নিয়েই বিভ্রান্ত মেদিনীপুরের মানুষজন।যার ফলে নস্টালজিয়া ক্লাব স্কোয়ারের সরস্বতী পুজো করতে অপারগ ক্লাব কর্তারা।এরই সঙ্গে যোগ হয়েছে মোবাইল আসক্ত প্রজন্ম যার জন্য পুজো করা সেই সঙ্গে হৈ হুল্লোড় করা থেকে বিরত বর্তমান প্রজন্মরা।
ঐতিহ্যবাহী এবং বিপ্লবী শহর হলো এই পশ্চিম মেদিনীপুর।একসময় অবিভক্ত মেদিনীপুর ছিল যার মধ্যে ছিল পূর্ব মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রাম।পরবর্তীকালে তা ভাগ হয়ে নতুন জেলা রূপে আত্মপ্রকাশ করেছে।এই জেলা শহরে যেমন আনাচে কানাচের ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে বিপ্লবীদের বাড়ি ঘর তার বর্তমান প্রজন্ম ঠিক তেমনি রয়েছে বেশ কিছু পুজো ও কাহিনী। যেমন এরকমই এক সরস্বতী পুজো রয়েছে মেদিনীপুর কলেজ কলেজের কাছে কলেজ স্কয়ারের সরস্বতী পুজো। যার আভিজাত্যটাই হল বিভিন্ন ধরনের রাজনৈতিক কার্টুন,ছড়া কবিতা সেইসঙ্গে পাঁচফোড়নের মত নিন্দে করা ছবি ছাপা।এই কার্টুন এবং চালচিত্র প্রায় পঞ্চাশ বছরের উপর ধরে করে আসছে তৎকালীন প্রজন্ম থেকে বর্তমান প্রজন্ম।এ কলেজ স্কোয়ারের ১০০ মিটারের মধ্যে প্রায় ২৫ থেকে ৩০ টি পুজো হতো সাডম্বরে।
গোটা জেলার মানুষ এই পুজোর দিনে ভিড় জমাত এই কলেজ স্কোয়ারে। তারা পুজো মণ্ডপে দাঁড়িয়ে তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করে পড়তো সেই সব কবিতা,চুটকি ছড়া ও উপভোগ করতো ছবি ছাপা।কিন্তু এবারে তার ব্যতিক্রম ঘটলো বেশ কিছু কারনের জন্য।এই কারণগুলি খতিয়ে গিয়ে দেখা গেল দেখা গেল বর্তমান জেলা প্রশাসনের ঘন ঘন নিয়ম পরিবর্তন এবং খাম খেয়ালী নির্দেশিকায় পুজো থেকে বিরত হয়েছে বেশ কিছু ক্লাব।এর সঙ্গে যোগ হয়েছে পঞ্জিকার দিনক্ষণের ফের ফের।কারণ পঞ্জিকা মতে দুদিন পড়েছে এবারের সরস্বতী পুজো।২ রা জানুয়ারি দুপুর বেলা বারোটা থেকে পরের দিন পুজো হচ্ছে।ফলে প্রথম দিন পূজো অনেকেই করতে চাইছেন না।আবার অনেকেই প্রথম দিনেই পূজো সেরেছেন বেলা করে।আবার অনেকেই ইতিমধ্যে মন্ডপ-ই তৈরি করে উঠতে পারেনি।
ফলে ক্লাব কর্তাদের মধ্যে দিনক্ষণ নিয়ে ধোঁয়াশায় কমলো এই পুজোর সংখ্যা।এরই সঙ্গে যোগ হয়েছে নতুন প্রজন্ম না আসার আক্ষেপ সেই সঙ্গে মূল্যবৃদ্ধি ও মোবাইল এর কারণ।কারণ বর্তমান প্রজন্ম শুধু মোবাইলেই আসক্ত ভিডিও রিল শটস গেম এবং ফেসবুক ইনস্টাগ্রাম মতো সোশ্যাল মিডিয়ায় তারা ডুবে গেছে যার ফলে এই কলেজ স্কোয়ারের নস্টালজিয়া সরস্বতী পুজো নিয়ে উন্মাদনা নেই বললেই চলে।ফলে সেই বিগত দিন থেকে টেনে আনা ৪০ ঊর্ধ্ব ক্লাব সদস্যরা কোন মতে টিকিয়ে রেখেছে তাদের এই সরস্বতী বন্দনা। বর্তমান ক্লাব কর্তারা উগরে দিয়েছেন একরাশ ক্ষোভ এবং হতাশা।
যদিও এই নিয়ে একরাশ ক্ষোভ উপরে দিয়েছে ক্লাব কর্তা অরূপ দাস ও রমা গিরি।তাদের বক্তব্য প্রশাসন তার ইচ্ছামত নির্দেশিকা চাপাচ্ছে।কখনো বলছে মাইক এত জোরে বাজানো যাবে কখনো বলছে মাইক করা যাবে না। কখনও বলছে এখানে পুজো করা যাবে, কখনো বলছে এখানে করা যাবে না। যার ফলে ক্লাব কর্তারা হতাশা এবং এই ক্ষোভে পুজো করেনি।এরই সঙ্গে রয়েছে এই পঞ্জিকার দিনক্ষণের হেরফের।অন্যদিকে অগ্নিকন্যা ক্লাব কর্তা সিদ্ধার্থ মন্ডল ওরফে বুদ্ধ বলেন পঞ্জিকার যা দিনক্ষণের হেরফের তাতে বিভ্রান্ত হয়েছে ক্লাব কর্তারা। তাই তারা পুজো থেকে কিছু হটেছেন।
এরই সঙ্গে যোগ হয়েছে মোবাইলে আসক্ত প্রজন্ম।তাই আস্তে আস্তে এই কলেজ স্কোয়ারের পূজো উঠে যাচ্ছে। পাশাপাশি আরেক ক্লাব কর্তা সুব্রত চক্রবর্তী বলেন প্রশাসনের দাপাদাপি তো আছেই সেই সঙ্গে রয়েছে জিনিসপত্রের দাম বাড়া,মোবাইল আসক্ত এবং পঞ্জিকার দিনক্ষণের হেরফের।বর্তমান প্রজন্ম মোবাইলে ডুবে রয়েছে যার জন্য হারিয়ে যাচ্ছে পুজো।