
নিজস্ব প্রতিনিধি,পুরুলিয়া:
এখনো ঠিকভাবে জিনাতের আতঙ্কের রেশ কাটিয়ে উঠতে পারেনি জঙ্গলমহল বাসি।ফের নতুন করে বাঘের আতঙ্ক পুরুলিয়া-ঝাড়খন্ড সীমান্ত এলাকায়।যার জেরে সন্ধ্যা নামলেই শুনশান হয়ে পড়ছে ব্যস্তবহুল এলাকা। শোনা যাচ্ছে ঝাড়খণ্ডের চাণ্ডিল লাগোয়া জঙ্গলে ঘোরাফেরা করছে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার।এই বাঘের গলায় জিনাতের মতো রেডিও কলার না থাকায় বাঘের গতিবিধি জানতে হিমশিম খেতে হচ্ছে ঝাড়খণ্ডের বনবিভাগকে।একটার পর একটা আতঙ্কের রাত কাটাচ্ছেন ওই এলাকার মানুষজন। সেই আতঙ্ক দানা বেঁধেছে ঝাড়খণ্ড ঘেঁষা পুরুলিয়াতেও।


প্রসঙ্গত,ঝাড়খণ্ডের সরাইকেলা-খরসোঁওয়া বনবিভাগের চান্ডিল রেঞ্জ ও খুঁটি বনবিভাগের তামাড় রেঞ্জ সীমানায় প্রায় ১০-১৫ কিমি ব্যাসার্ধ জুড়ে বাঘের পায়ের ছাপ মিলেছে।যার ফলে এই জঙ্গল লাগোয়া এলাকায় জারি করা হয়েছে ১৮৯(৪) ধারা। এই বাঘ ধরার জন্য বসানো হয়েছে একাধিক ট্র্যাপ ক্যামেরা।পাশাপাশি এলাকায় রাত- দিন চলছে মাইকিং প্রচার। সংশ্লিষ্ট এলাকার এলাকাবাসীদের জঙ্গলে যেতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে বনদপ্তর থেকে। এরই সঙ্গে সরাইকেলা খরসোঁওয়ার চান্ডিল বনাঞ্চলে জারি করা হয়েছে রেড অ্যালার্ট।ঝাড়খন্ড বনবিভাগের অনুমান বাঘ এসেছে পালামৌ থেকে।বাঘের আগমন ঘটতেই ভয়ে কাঁটা ওই এলাকার মানুষজন।

তবে অন্যদিকে ঝাড়খণ্ড ঘেঁষা পুরুলিয়াতেও সেই আতঙ্ক গ্রাস করেছে।কারণ সদ্য জিনাতের তাণ্ডব দেখে আতঙ্ককে ভুলতে পারেনি বান্দোয়ান,মানবাজারের বাসিন্দারা। এবার যে এলাকায় বাঘের পায়ের ছাপ পাওয়া গিয়েছে সেই এলাকা থেকে বলরামপুরের দাঁতিয়ার সীমানা মাত্র ২৫ কিলোমিটার। যার ফলে প্রকৃত দূরত্ব মাত্র ১৫ কিলোমিটার।বাঘের পদচিহ্ন থেকে স্পষ্ট এক রাতে ওই বাঘ প্রায় ১২ থেকে ১৫ কিমি হাঁটছে।এলাকা থেকে বেশ কয়েকটি গবাদি পশুর রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয়েছে।ফলে আতঙ্ক বাড়ছে ঝাড়খন্ড ছুঁয়ে থাকা পুরুলিয়ার বলরামপুর, বাঘমুন্ডির গ্রামগুলিতে।

যদিও অন্যদিকে এখনও পর্যন্ত ঝাড়খন্ড বন বিভাগের পক্ষ থেকে পুরুলিয়ার বন বিভাগকে অফিসিয়াল কোনো তথ্য দেয়নি বলে দাবি পুরুলিয়া বনে বিভাগের ডিএফও অঞ্জন গুহর।তবুও আগে থেকেই সতর্ক রয়েছে পুরুলিয়া বন বিভাগ।পুরুলিয়ার বলরামপুর, মাঠা, বাঘমুন্ডি বনাঞ্চলের রেঞ্জ আধিকারিক ও বনকর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন পুরুলিয়া বন বিভাগের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা।পুরুলিয়া ঝাড়খন্ড সীমান্ত এলাকায় বাঘের উপস্থিতির খবর মিলতে তৎপর রয়েছে পুরুলিয়ার বন দফতর।

ওড়িশার বাঘিনী জিনাত যেভাবে তিন রাজ্যের বন বিভাগকে নাজেহাল করেছে তার পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে তাই আগেভাগেই সতর্ক পুরুলিয়া বনবিভাগ।