
নিজস্ব প্রতিনিধি,মেদিনীপুর :
মেদিনীপুরে লোক আদালতে এবার বিচারকের ভূমিকায় এক আগুনে দগ্ধ প্রতিবন্ধী মহিলা,নাম পূর্ণিমা শাসমল মাইতি।এরকমই চিত্র মেদিনীপুরের জেলা আদালতে।এইদিন সারাদিন বসে অভাব অভিযোগ শুনলেন।অবশেষে রায় দিলেন বাদী-বিবাদীদের পক্ষে এবং বিপক্ষে। সমাজের প্রতি বার্তা মহিলার”কম বয়সী ছেলে-মেয়েদের বিবাহ দেবেন না এবং বিবাহের পূর্বে মেডিকেল টেস্ট করিয়ে নেবেন নিজেদের”।

ওই মহিলার বিবরণ অনুযায়ীএই মহিলার বাড়ি ঘাটালের দেওয়ান চকে।খুব ছোটবেলায় ২০০৬ সালে বিয়ে হয় ডেবরার মির্জাপুর গ্রামে।পরবর্তী কালে গার্হস্থ্য হিংসার শিকার হন তিনি। শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাকে কেরোসিন ঢেলে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করে।যদিও সেই যাত্রায় তার জীবন বেঁচে গেলেও শরীরের আশি ভাগ পুড়ে যায়।চিকিৎসা সেরে তিনি প্রতিবন্ধী হয়ে পড়েন।পরবর্তীকালে জীবন যুদ্ধে দাঁত চিপে লড়াই চালায়।এইচএস এবং M.SC কমপ্লিট করে ফেলেন।পরিস্থিতি কঠিন হলেও লড়াই চালিয়ে যান অবশেষে এখনো তিনি রীতিমত প্র্যাকটিস করছেন ঘাটালের ব্লাড ব্যাংকে। তার আর্থিক উপার্জন বলতে সরকারের দেওয়া মানবিক ভাতা সঙ্গে লক্ষীর ভান্ডারের ৫০০ টাকা।এহেন গৃহবধূকে এবার দেখা গেল রীতিমতো বিচারকের আসনে মেদিনীপুর লোক আদালতে।সারাদিন শুনলেন বাদী-বিবাদী পক্ষের অভাব অভিযোগ।অবশেষে রায় ও দিলেন।যদিও নিজের তিক্ত অভিজ্ঞতা থেকে একটাই বক্তব্য ছিল তার'”যেন পরিণত বয়স ছাড়া কোনোভাবেই ছেলে মেয়েদের বিবাহ না দেন তার অভিভাবকেরা।পাশাপাশি তার বার্তা ছিল যাতে বিবাহের পূর্বে সমস্ত রকম মেডিকেল চেকআপ করা হয় পাত্র-পাত্রীর বিশেষ। করে থ্যালাসেমিয়ার মতো রোগ যেন নির্ণয় করার পরেই বিবাহ হয় পরিবারের সম্মতিতে।

আক্রান্ত মহিলা বলেন আমার জীবনের তিক্ত অভিজ্ঞতা থেকে একটাই বার্তা দিতে চাই সমাজকে।সেটা হল কোনভাবেই যেন আজকের সমাজে ছোটবেলায় ছেলে এবং মেয়ের বিবাহ না দেওয়া হয় তার পরিবার থেকে।
যদিও এদিন এই আদালতের বিচারপতি মণিকুন্তলা রায় বলেন মূলত লোক আদালতে বিভিন্ন মানুষের সমস্যার সমাধান করা হয়।এক্ষেত্রে এই ধরনের মানুষদের নিয়ে এসে আমরা সমাজে বার্তা দিতে চাই “যে উনারা সমাজ থেকে আলাদা না,সমাজে ফিরিয়ে আনায় মূল লক্ষ্য আমাদের”এই বার্তাটাই দিতে চাই আমরা।